ছবিঃ সংগৃহীত
জেনেভা থেকে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (ICRC) প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজারিক বলেছেন, গাজা বর্তমানে "নরকের চেয়েও ভয়াবহ" অবস্থায় আছে। তিনি বলেন, “আমরা মানবতার ব্যর্থতা দেখছি – একটি জাতিকে পুরোপুরি মানব মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করার দৃশ্য আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো।”
স্পোলজারিক বলেন, বিশ্বের রাষ্ট্রনায়কদের উচিত অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধে এগিয়ে আসা এবং ফিলিস্তিনিদের কষ্ট ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, "এই ধ্বংসযজ্ঞ, এই দুর্ভোগ – সব কিছু মানবতা, আইন, নৈতিকতা ও মানবিক মানদণ্ডের সীমা অতিক্রম করেছে।"
ICRC প্রেসিডেন্ট বলেন, যুদ্ধের নিয়ম সবার জন্য সমান। তিনি বলেন, “গাজায় একটি শিশুর জন্য যে সুরক্ষা প্রযোজ্য, তা ইসরায়েলের শিশুর জন্যও প্রযোজ্য।”
তিনি বলেন, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়াকে কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত করতে পারে না। “কোনও পক্ষই নিয়ম ভাঙতে পারে না। এই নিয়মগুলো মানব জাতির মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য।”
রাফার ICRC সার্জিক্যাল হাসপাতালে একদিনে ১৮৪ জন আহত আসে, যাদের মধ্যে ১৯ জন আগেই মারা যায় এবং ৮ জন পরে মারা যান। এটি ছিল এক বছরে হাসপাতালের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ দিন।
তিনি বলেন, “গাজায় এখন কোনও জায়গাই নিরাপদ নয় – না বেসামরিকদের জন্য, না জিম্মিদের জন্য, এমনকি আমাদের হাসপাতাল কর্মীদের জন্যও না।”
স্পোলজারিক সতর্ক করেন, “আমরা যদি শান্তির পথে ফিরে যাওয়ার উপায় এখনই ধ্বংস করে ফেলি, তাহলে এই অঞ্চল আর কখনও নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পাবে না।”
তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ এখনই থামানো সম্ভব। এখনও দেরি হয়নি। বিশ্বনেতারা এই ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে ব্যর্থ হলে, তা একদিন তাদের দ্বারেও পৌঁছাবে।”
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে ৫৪,৬০০ এর বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে শুধু ১৮ মার্চের পর মারা গেছে ৪,৩৩৫ জন।
তিনি বলেন, “এই মানবিক বিপর্যয় আমাদের বিবেককে চিরকাল তাড়িয়ে বেড়াবে। মানবতা আজ চরম পরীক্ষার মুখোমুখি।”
সূত্রঃ বিবিসি
নোভা
