ছবি: সংগৃহীত
ইলন মাস্ক ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব এবার সরাসরি প্রভাব ফেলল শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবার একদিনেই টেসলার শেয়ার মূল্য কমে গেছে ১৪ শতাংশ, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য থেকে ১৫৩ বিলিয়ন ডলার মুছে গেছে। এটি টেসলার ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ পতনের রেকর্ড।
প্রাথমিকভাবে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মাস্ক-ট্রাম্প সখ্যকে স্বাগত জানিয়েছিল বিনিয়োগকারীরা। তবে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় ট্যাক্স সংস্কার নিয়ে মতবিরোধের পর থেকে। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ নিয়ে ইলন মাস্কের সমালোচনার জবাবে, ট্রাম্প হুমকি দেন টেসলা ও স্পেসএক্সের সাথে সরকারের চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার।
টেসলার জন্য দুঃসময়
ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, একদিনের এই দরপতনে শেয়ারবাজারে টেসলা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হয়েছে শর্ট সেলাররা—যারা এই পতন থেকে পেয়েছে আনুমানিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া, মাস্কের DOGE মুদ্রা সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এপ্রিলে ইলন মাস্ক ঘোষণা দেন, তিনি সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করে টেসলার ওপর বেশি মনোযোগ দেবেন। এই ঘোষণার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে শেয়ারবাজারে। কিন্তু সদ্য প্রকাশ্যে ট্রাম্প-মাস্ক বাকযুদ্ধ সেই স্বস্তিকে ভয়-আশঙ্কায় রূপান্তর করেছে।
রাজনীতিতে জড়ানো কি ব্যবসার ক্ষতি করছে?
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক অবস্থান ও সামাজিক মাধ্যমে কর্মকাণ্ড—এসব কিছুই টেসলার ব্র্যান্ড ক্ষয় করছে। বিগত এক বছরে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে মার্কিন বাজারে অনেক ক্রেতা মুখ ফিরিয়েছেন টেসলার দিক থেকে। বিদেশেও প্রতিবাদ ও বর্জনের ডাক উঠেছে। টেসলার শেয়ার ইতিমধ্যেই ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ দামের চেয়ে ৪১ শতাংশ কমে নেমে এসেছে।
ভবিষ্যৎ কী টেসলার?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এত বড় পতনের পর টেসলার শেয়ার হয়তো ভবিষ্যতে 'বাইং অপারচুনিটি' হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে 'ফলিং নাইফ' ধরার ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নয় অনেক বিনিয়োগকারী।
যদিও টেসলা এখনও বৈদ্যুতিক গাড়ি খাতে অন্যতম বড় নাম, তবে কোম্পানির ভবিষ্যৎ যে অনেকাংশেই ইলন মাস্কের রাজনৈতিক অবস্থান ও ব্যক্তিগত আচরণের ওপর নির্ভর করছে, তা এই শেয়ার পতন আবারও প্রমাণ করল।
আঁখি
