ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পারমাণবিক চুক্তিতে নতুন মোড়; দাবি ইরানকে ছাড় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৫ জুন ২০২৫

পারমাণবিক চুক্তিতে নতুন মোড়; দাবি ইরানকে ছাড় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে একাধিক দফা বৈঠক করেছে মার্কিন প্রশাসন। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

শুরু থেকেই ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সবশেষ গত সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, কোনোভাবেই তেহরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

তবে মার্কিন হুমকির তোয়াক্কা না করে বরাবরের মতো উল্টো অবস্থানে রয়েছে ইরান। দেশটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হবে না—এটি যদি যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হয়, তবে আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারি। কিন্তু তাদের চাওয়া যদি অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য হয়—অর্থাৎ আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কার্যক্রমের অধিকার কেড়ে নিতে চায়—তবে কোনো চুক্তি হবে না।”

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, আগের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসে স্বল্পমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি দিয়েই ইরানকে নতুন এক অন্তর্বর্তী প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অনেক বিশ্লেষকের মতে, মুখে হুমকি দিলেও তেহরানের অনড় অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত নমনীয় হতে বাধ্য হয়েছেন ট্রাম্প।

নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যানুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের স্বাক্ষরিত একটি প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে নতুন একটি পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে সহায়তা করবে। সেই চুল্লিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা পরিচালনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করবে মার্কিন প্রশাসন। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রস্তাবিত প্রকল্প থেকে সুফল পাওয়ার পর ইরানকে দেশব্যাপী থাকা অন্যসব পারমাণবিক স্থাপনা বন্ধ করতে হবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন প্রস্তাব নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি ইরান। ইসরাইলও প্রকাশ করেনি কোনো প্রতিক্রিয়া। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে ইঙ্গিত মিলছে, প্রস্তাবিত চুক্তি পছন্দ না হলে ইরানে হামলা চালাতে পারে ইসরাইল, এমন আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে বরাবরই কড়া অবস্থানে রয়েছে।

ফরিদ 

×