ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ চাকরির বাজারে সবাই যখন নিজের ডিগ্রি, অভিজ্ঞতা ও পরিমাপযোগ্য অর্জন তুলে ধরতে ব্যস্ত, তখন অনেকেই সফট স্কিল বা মানবিক দক্ষতার গুরুত্ব উপেক্ষা করেন। অথচ একবিংশ শতাব্দীর কর্পোরেট বাস্তবতায় সফলতার জন্য সফট স্কিল অপরিহার্য।
এই বাস্তবতাকেই সামনে এনেছেন ইর্মগার্ড নডিন টেন কেট, বিশ্বখ্যাত পেশাদার সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান EY (আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং)-এর গ্লোবাল ট্যালেন্ট আকর্ষণ ও নিয়োগ বিষয়ক প্রধান। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন—সফট স্কিল কখনো অবহেলার নয়, বিশেষ করে যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) আমাদের কাজের জায়গাগুলো দ্রুত বদলে দিচ্ছে।
তিনি জানান, চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তিনি যে তিনটি সফট স্কিল সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করেন, তা হলো:
১. জিজ্ঞাসু মানসিকতা বা কৌতূহল
ইর্মগার্ড মনে করেন, প্রতিনিয়ত শেখার মানসিকতা যেকোনো পেশার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, “শিক্ষা মানে এখন আর শুধু বই পড়া নয়, বরং প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার অভ্যাস গড়ে তোলা।” চাকরিপ্রার্থীদের উচিত—নিজেদের এমনভাবে তৈরি করা যেন তারা নতুন দক্ষতা অর্জনে আগ্রহী এবং পরিবর্তনের সাথে তাল মেলাতে সক্ষম হন।
২. পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা
বর্তমানে "পরিবর্তনই স্বাভাবিক"—এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে যে ব্যক্তি নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে, তিনিই এগিয়ে থাকেন।
ইর্মগার্ড বলেন, “ডিজিটাল পরিবর্তন হোক বা অন্য কোনো রূপান্তর—এটা মেনে নিয়ে কাজ করতে পারাটাই বড় স্কিল।”
কাজের ধরন, টিম কাঠামো কিংবা প্রযুক্তির ব্যবহার—সব ক্ষেত্রেই মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. প্রভাব বিস্তার ও দরকষাকষির দক্ষতা
অনেকেই ভাবেন ‘নেগোশিয়েশন’ কেবল ব্যবসায়িক লেনদেনেই দরকার, কিন্তু বাস্তবে প্রতিদিনের কাজেই এটি ঘটে।
ইর্মগার্ড বলেন, “আমরা প্রায়ই এমন আলোচনায় থাকি, যেখানে কাউকে বুঝিয়ে আমাদের বক্তব্যে নিয়ে আসতে হয়।” এই দক্ষতার মধ্যে পড়ে—ভিন্ন মতামতের মানুষের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়া, বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সমাধানে পৌঁছানো এবং পরস্পরের প্রয়োজন মেনে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো।
তিনি বলেন, প্রার্থীরা যদি এমন কোনো বাস্তব উদাহরণ দিতে পারেন যেখানে তারা টিমের মধ্যে মতবিরোধ মিটিয়ে সমাধানে পৌঁছেছেন, তাহলে সেটি তাদের দক্ষতার স্পষ্ট প্রমাণ হবে।
এই তিনটি সফট স্কিল—কৌতূহল, অভিযোজনক্ষমতা, এবং প্রভাব বিস্তার—কেবল চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে একজন সফল পেশাজীবী হয়ে ওঠার জন্যও অপরিহার্য। প্রার্থীদের উচিত এগুলোর প্রয়োগযোগ্যতা বা ‘ট্রান্সফারেবল স্কিল’ হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরা।
মুমু
