ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘টক্সিক’ সহকর্মীর জ্বালায় অতিষ্ঠ? কীভাবে এই ধরনের মানুষদের থেকে নিজেকে বাঁচাবেন?

প্রকাশিত: ২২:২৭, ১ জুন ২০২৫; আপডেট: ২২:২৮, ১ জুন ২০২৫

‘টক্সিক’ সহকর্মীর জ্বালায় অতিষ্ঠ? কীভাবে এই ধরনের মানুষদের থেকে নিজেকে বাঁচাবেন?

ছ‌বি: প্রতীকী

বর্তমান কর্পোরেট দুনিয়ায় “টক্সিক ওয়ার্ক কালচার” বা “টক্সিক সহকর্মী” শব্দগুলো এখন আর নতুন নয়। অনেকেই কর্মস্থলে এমন কিছু সহকর্মীর মুখোমুখি হন, যাদের ব্যবহার, মন্তব্য কিংবা মনোভাব পুরো কাজের পরিবেশকেই বিষিয়ে তোলে। এদের আচরণ শুধু মানসিক চাপ বাড়ায় না, বরং সহকর্মীদের পারফর্ম্যান্সেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

কীভাবে চিনবেন ‘টক্সিক’ সহকর্মীকে?
এই ধরনের সহকর্মীদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে—

  • নেতিবাচক কথাবার্তা: তারা প্রায়শই গুজব ছড়ায়, অন্যের কাজের সমালোচনা করে এবং সবার মাঝে বিভাজন তৈরি করতে চায়।

  • অসহযোগিতা: ইচ্ছাকৃতভাবে দলগত কাজে সহায়তা না করা, সহকর্মীর সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হওয়া এবং ক্ষতি করার চেষ্টা করা এদের বৈশিষ্ট্য।

  • মানসিক চাপ তৈরি: তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে অন্যের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করে, দুর্বলতার সুযোগ নেয় এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে লিপ্ত হয়।

এই ধরনের কর্মীদের উপস্থিতি অফিসের পরিবেশকে বিষাক্ত করে তোলে। হতাশা, মানসিক অবসাদ এবং দন্দ্ব বেড়ে যায়। তবে সঠিক কৌশল অবলম্বন করলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব।

কীভাবে রক্ষা করবেন নিজেকে?

  • নিজস্ব সীমানা নির্ধারণ করুন:
    টক্সিক সহকর্মীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন। কর্মস্থলের বাইরের কথাবার্তা সীমিত রাখুন এবং তাঁদের নেতিবাচক মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া না দেখান।

  • পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন:
    তাদের আচরণ যতই অসহ্য হোক না কেন, সবসময় শান্ত, ভদ্র ও পেশাদার থাকুন। তর্কে না জড়িয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দিন এবং দক্ষতা দিয়ে নিজের জায়গা তৈরি করুন।

  • ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান:
    যদি কারও আচরণ আপনার কাজে বা মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে, তবে বিষয়টি আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা মানবসম্পদ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করুন। প্রয়োজনে লিখিত অভিযোগের জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করুন।

  • নিজেকে মানসিকভাবে সুরক্ষিত রাখুন:
    নিয়মিত বিশ্রাম নিন, পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান এবং ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রাখুন। বই পড়া, সিনেমা দেখা কিংবা ভালো আড্ডা মন ভালো রাখতে সাহায্য করবে।

  • সঠিক সঙ্গ বেছে নিন:
    সব সহকর্মীই টক্সিক নন। অনেকেই আছেন যারা পেশাদার, সহযোগিতাপূর্ণ এবং সচেতন। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন, যা কর্মজীবনকে অনেক সহজ করে তুলতে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— নিজের মানসিক সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া। পরিস্থিতি অত্যন্ত প্রতিকূল হয়ে উঠলে, কর্মস্থল পরিবর্তনের কথা ভাবাও হতে পারে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। মনে রাখবেন, বিষাক্ত পরিবেশ থেকে সরে আসা দুর্বলতা নয়— বরং নিজের প্রতি দায়িত্ববোধেরই পরিচয়।

এম.কে.

×