
ছবি: সংগৃহীত
জেরোধা’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিখিল কামাথ সম্প্রতি তাঁর পডকাস্ট ‘পিপল বাই ডব্লিউটিএফ’-এর সর্বশেষ পর্বে ইউটিউব সিইও নীল মোহনের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাদের কথোপকথনে নানা বিষয় উঠে আসে, যেমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কীভাবে রাজনৈতিক বিতর্ক প্রভাবিত করে এবং ইউটিউবের অ্যালগরিদম কার্যকরভাবে ব্যবহার করার কৌশল। এ পর্বে একটি চমকপ্রদ তথ্য সামনে আসে: ২০১১ সালে, গুগল নীল মোহনকে টুইটারে যোগ না দেওয়ার জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৮৫৫ কোটি টাকা) শেয়ার অফার করেছিল। তখন টুইটার (বর্তমানে এক্স নামে পরিচিত) তাদের পণ্য বিভাগে অভিজ্ঞ নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মোহনকে প্রধান পণ্য কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিতে চেয়েছিল।
২০১১ সালে টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুগলের এই অফার ছিল সীমাবদ্ধ স্টক ইউনিটের (RSU) আকারে, যা ধাপে ধাপে কয়েক বছরের মধ্যে মঞ্জুর হতে থাকতো। এটি গুগলের দৃঢ় প্রচেষ্টা ছিল মোহনকে টুইটারে যাওয়া থেকে রোধ করার জন্য। মোহনের পূর্ববর্তী সুপারভাইজার ডেভিড রোজেনব্ল্যাট তখন টুইটারের বোর্ড সদস্য ছিলেন এবং মোহনকে প্রধান পণ্য কর্মকর্তা হিসেবে টুইটারে নিয়ে আসার জন্য আগ্রহী ছিলেন।
পডকাস্টে কামাথ বলেন, “আমি মনে করি পড়েছিলাম যে, গুগল আপনাকে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল যাতে আপনি চলে না যান। আজ নয়, কিন্তু পনেরো বছর আগে, যা তখন অনেক বড় টাকা ছিল।” মোহন এই দাবিকে অস্বীকার করেননি।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আলোচনার পাশাপাশি, মোহন তাঁর লখনৌতে বেড়ে ওঠার গল্প শেয়ার করেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর প্রাথমিক অভিজ্ঞতা এবং কিভাবে আমেরিকায় বসবাস তাঁর আবেগ ও অনুসন্ধিৎসাকে প্রভাবিত করেছে।
পডকাস্টে মোহন জানান, তিনি ভারতের লখনৌতে জন্মগ্রহণ করেন যখন তাঁর পিতা ভারতের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইআইটি-তে পড়াশোনা করছিলেন। তার কিছুদিন পরে পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র চলে যান যখন তাঁর পিতা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করছিলেন। “আমি তখনই জন্মগ্রহণ করেছিলাম যখন আমার মা-বাবা গ্র্যাজুয়েট স্কুলে পড়ছিলেন,” তিনি উল্লেখ করেন, এবং বলেন তাঁর বেশিরভাগ শৈশব আমেরিকাতেই কাটে।
১৯৮৬ সালে পরিবার পুনরায় ভারত ফিরে আসে। মোহন লখনৌর সেন্ট ফ্রান্সিস কলেজে ভর্তি হন এবং পাঁচ বছর সেখানে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়েন।
ভারতে সপ্তম শ্রেণীতে ফিরে আসা তাঁর জন্য কঠিন ছিল বলে স্বীকার করেন মোহন। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তাঁর হিন্দি ভাষায় দুর্বলতা, যা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন করে তোলে।
তিনি বলেন, “আমেরিকায় বেড়ে আমি বেসবল খেলতে ভালোবাসতাম, ট্রান্সফর্মার্সের মতো জিনিস পছন্দ করতাম। তারপর এখানে আসার পর, আমার উচ্চারণ অদ্ভুত শোনাতো। তাই মানুষের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা কঠিন ছিল।”
মোহন বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তিতে আগ্রহী ছিলেন। “আমি প্রযুক্তিবিদ হিসেবে প্রশিক্ষিত। ছোট থেকেই প্রযুক্তির প্রতি গভীর আগ্রহ ও অনুরাগ ছিল,” তিনি কামাথকে জানান।
তিনি বলেন, “আমি লখনৌতে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েছি। তখন একটি ছোট সফটওয়্যার স্টার্টআপ করতাম, যা অন্য শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করত। তাই প্রযুক্তিতে আমার আগ্রহ সবসময় ছিল।”
সূত্র: ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস
আবির