
পানির অপর নাম জীবন। পৃথিবীতে তিন ভাগ জল একভাগ স্থল। তবু দেখা দিচ্ছে খাবার পানির সংকট। পৃথিবীতে যে পরিমাণ পানি আছে তার একটা বৃহৎ অংশ লবণাক্ত। পৃথিবীতে সুপেয় পানির খুবি অভাব। অনেকেই সুপেয় পানি পেতে দূষিত পানি ফুটিয়ে, ফিল্টারিং করে পান করে থাকেন। ঢাকায় অধিকাংশ মানুষ ওয়াসা থেকে পানি সংগ্রহ করে থাকেন। অনেকে আবার দোকান থেকে পানি কিনে খান। মাটির গভীর থেকে উত্তোলনকৃত পানির ব্যবহারে আমরা অধিকাংশ মানুষ এই অসচেতনতার পরিচয় বহন করে আসছি। যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হুমকিস্বরূপ। ভূগর্ভস্থ পানির উচ্চতা যদি নেমে যায় তবে তা পৃথিবীতে বসবাসরত মানুষের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। যা মোকাবেলায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা অনেকেই ওয়াশরুমে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করে থাকি, যা আমাদের বোধশক্তিকে জাগ্রত করতে ব্যর্থ হয়। পানির ট্যাপ অযথা চালিয়ে রাখা, গোসলে অহেতুক পানি নষ্ট করা ঠিক নয়। প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি দরকার। অন্যথায় পুরো পৃথিবী সংকটে নিপতিত হবে, যা থেকে উত্তরণের পথ হবে খুবই ভয়ংকর।
রাজধানীর অধিকাংশ স্থান কংক্রিটে ঢাকা। তাই কংক্রিটকে ভেদ করে বৃষ্টির পানি নিচে যেতে পাড়ছে না। যার ফলে ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে চলে যাচ্ছে। যা ভবিষ্যতের সুপেয় পানির জন্য বড় ধরনের হুমকি বয়ে আনতে পারে। এর জন্য যত পারা যায় মাটির স্তর ফাঁকা রাখা কংক্রিট দিয়ে ঢেকে না দেওয়া। শহরগুলোতে আছে নানা ধরনের কলকারখানা, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং কয়েক কোটি মানুষের সমাগম। আয়তনের চেয়ে ভবনের সংখ্যা বেশি তাও আবার বহুতল ভবন। এতে প্রতিনিয়ত উৎপাদিত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ভোগ্য ও বিলাসিতা পণ্যসামগ্রী, যা তৈরি করতে লাখ লাখ গ্যালন পানি প্রতিদিন ব্যবহৃত হচ্ছে। যার বেশির ভাগই এই সুপেয় পানি। কিন্তু এই পানি কলকারখানার কাজে ব্যবহারের ফলে দূষিত হয়ে যাচ্ছে।
তাই সুপেয় পানি কলকারখানাগুলোতে ব্যবহারের বিধিনিষেধ আরোপ করা দরকার। অনেকেই রান্না করতে গিয়ে, ওযু করতে গিয়ে, আসবাবপত্র ধৌত করতে গিয়ে পানির ট্যাপ ছেড়ে রাখেন যা কখনো একজন সুনাগরিক হিসেবে কারো কাছে কাম্য নয়। দেশ আপনার আমার সবার। তাই দেশকে নিয়ে সবার ভাবতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি হতাশাজনক পৃথিবীতে রেখে যাওয়ার জন্য আমরাই দায়ী হব। তাই হতাশা নয় পৃথিবীকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে শান্তিময় করতে আজেই সচেতন হই। দেশ ও দশের জন্য কাজ করার মধ্যেই আসল সুখ।
লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
প্যানেল