
ঈদুল আজহাকে ঘিরে প্রতিপাদ্য বিষয় হলেও উৎসব অর্থনীতির আওতায় সঙ্গতকারণেই উৎসব সম্পর্কে কিছু বলা আবশ্যক বলে মনে করি। উৎসব হলো আনন্দলাভ ও প্রকাশের নির্মল আনন্দ অনুষ্ঠান। অন্য কথায় যদি বলি, তাহলে এই দাঁড়ায় যে পারিবারিক বা সামাজিক বা সাম্প্রদায়িক বা জাতীয় সমাবেশ থেকে সুখ বা আনন্দ লাভ করার দিনক্ষণে সংগঠিত প্রপঞ্চ (Phenomenon) হলো উৎসব। আভিধানিক অর্থেও ‘উৎসব’ বলতে আনন্দময় অনুষ্ঠানকে বোঝায়। তবে সে আনন্দের রূপ-চেতনা সবসময় এক রকম হয় না। সেজন্যে পারিবারিক আঙ্গিনায় সীমিত এবং বহুজন বা দশজনকে নিয়ে কৃত অনুষ্ঠানকেই উৎসব বলা হয়ে থাকে। এদিকে ইংরেজি ফেস্টিভাল (Festival) শব্দের অর্থ পর্ব সংক্রান্ত উৎসব, যা লাটিন Festivus শব্দ থেকে এসেছে। আর ফেস্টিভাল বা উৎসব শব্দ ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। আসলে সমাজের নানাজনের সঙ্গে এর সম্পর্ক। ব্যক্তি বা পরিবার সেখানে গৌণ, কখনোওবা অনুপস্থিত। উৎসব সেখানে নির্দিষ্ট ঋতু বা দিনের অনুষ্ঠানমালার সমাহার। মোটকথা, বড় আকারে বা দেশব্যাপী সংঘটিত আনন্দময় অনুষ্ঠানকে উৎসব বলা হয়ে থাকে। প্রধানত সর্বসাধারণ বা বহুজনের জন্য নির্দিষ্ট দিন, যা সময় বা ঋতুতে এক বা একাধিক স্থান কিংবা বিশেষ কোনো সমাজে বা সম্প্রদায়ে অনুষ্ঠিত নির্মল আনন্দজনক ক্রিয়া বা কর্ম হলো উৎসব। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের উৎসব হয়ে থাকে। এ উৎসবগুলো কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত। যেমন- ধর্মীয় উৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসব, সামাজিক উৎসব, পারিবারিক উৎসব, জাতীয় উৎসব ইত্যাদি। কালের বিবর্তনে এসব উৎসবের কোনটির রূপ বদলায়। আবার কোনটির বিলুপ্ত ঘটে। আবার কোনটির নতুনভাবে সৃষ্টি হয়। তবে সব উৎসবের মূলেই রয়েছে নির্মল আনন্দের স্রোতধারা। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থের প্রবাহ কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি অনেক সময় ব্যষ্টিক (Micro) ক্ষেত্রে হলেও সামষ্টিক (Macro) দিক দিয়ে এর সুদূরপ্রসারী গতিশীলতা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক অবদান রাখে। আর এটি সামাজিকীকরণের (ঝড়পরধষরুধঃরড়হ) আওতাভুক্ত সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে মৌলিক চাহিদা অতিক্রম করত মূল্যস্ফীতি সৃষ্টির বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এক্ষেত্রে আমাদের সমাজ তথা দেশে যে সকল উৎসব সংঘটিত বা অনুষ্ঠিত হয়, তার চারদিকে অর্থনীতিও আবর্তিত হয়ে থাকে। সমাজের সৌরভমন্ডিত যে পুষ্প গজায়, তার সুগন্ধির ভাগিদার হয়ে অর্থনীতি স্বমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। মূলত আর্থিক কর্মকাণ্ডের প্রসারই মজবুত করে অর্থনীতিকে। অবশ্য এক্ষেত্রে মুদ্রা সরবরাহের আওতায় লেনদেনের পরিসর প্রণিধানযোগ্য। তাছাড়া ভেলোসিটি অব মানি (Velocity of Money) বড় একটি নিয়ামক। এক্ষেত্রে একটি কথা না বলে পারছি না; তাহলো- অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন যে, একটি অর্থনীতি তখনই সাউন্ড বলা হয়, যখন সেখানে একদিনে গড়ে একই পরিমাণ অর্থের আওতায় লেনদেনের মাধ্যমে ন্যূনতম তিনবার হাত বদলায়। আসলে তখনই বারবার লেনদেন হতে থাকে, যখন আর্থিক প্যারামিটারগুলো অনুকুল পরিবেশে চলমান থাকে। যদি কিছুটা সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করি, তাহলে প্রতীয়মান হয় যে, ব্যয়ই অর্থনীতির আয় হিসেবে প্রতিভাত হয় এবং আর্থিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে দেশজ উৎপাদনের সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এ সূত্র ধরে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতিশীলতা আনে এবং নতুন নতুন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ ঘুমিয়ে থাকা সম্পদ জেগে ওঠে সক্রিয় হয়। তাছাড়া সম্পদের সুসম বন্টনের পন্থা সৃষ্টিপূর্বক সর্বক্ষেত্রে কম-বেশি অবস্থান নিয়ে থাকে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে অর্থের প্রবাহের ক্ষেত্রে গঠনমূলকভাবে চোখ-কান খোলা রাখলে এবং ম্যাক্রো লেভেলে দক্ষতার সঙ্গে সচেষ্ট হলে মানি মার্কেট থেকে মুদ্রা সরবাহের হাত ধরে লেনদেনের আওতায় উৎপাদনের চার উৎপাদক (ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন) নড়াচড়া দিয়ে ওঠে এবং সেই ক্ষেত্রে যার যার মতো করে চলতে থাকে। এই কথাগুলো এই কারণে বললাম যে, বড় বড় উৎসবে যে বাড়তি অর্থের সরবরাহের প্রবাহ চলতে থাকে, তা ব্যষ্টিক ক্ষেত্রে হলেও সামষ্টিকভাবে অর্থনীতিকে আনুপাতিকহারে চাঙ্গা করে তুলে। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ লর্ড কেইনস অনেক ক্ষেত্রে তা তুলে ধরেছেন এবং বাস্তবেও তা পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এটা সর্বজনবিদিত যে ছোট বড় সব উৎসবে বাড়তি অঙ্কের টাকার প্রবাহ বাজারে চলে আসে। আর উৎসবের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বড় অঙ্কের টাকা শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ থাকে না, গ্রাম পর্যায়ে চলে যায়। কেননা নাড়ীর টানের আবেশে সবকিছু অতিক্রম করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ জন্মভূমি গ্রাম চলে যায় বিধায় সেখানে নানা আঙ্গিকে নিস্ক্রিয় প্যারামিটারগুলো উজ্জীবিত করে তোলে। তবে এই অর্থ প্রবাহের বাধাও কম নয়। চলে চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, মলম পার্টি, স্থানীয় নেতার দৌরাত্ম্য ইত্যাদি। এতে অযথা পণ্যের দাম বাড়িয়ে নরমাল তথা অ্যাকাউন্টিং প্রাইজকে কোণঠাসা করে সেই ডুবে যাওয়া আউশ ধান কাটার ক্ষেত্রে নিয়োজিত অস্বাভাবিক শ্রমমূল্যের ন্যায় বাড়িয়ে তোলে, যা অনেক সময় আর্থিক ফোঁড়ার সৃষ্টি করে।
ঈদুল ফিতরের ন্যায় ঈদুল আজহায় কতগুলো কমোডিটির চাহিদা ও গুরুত্ব কম থাকলেও বড় আইটেম হলো কোরবানির পশু। এই ঈদে বলতে গেলে শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ ব্যয় হয় এই খাতে। অবশ্য চাহিদা কম থাকলেও কতগুলো কমোডিটি কমন যেমন- নতুন কাপড়-চোপড়, সুগন্ধি, টুপি, আয়োজিত ঈদ খাবার, গ্রামমুখী মানুষের যাতায়াত খরচ, বেড়ানো ইত্যাদি। কিন্তু বাড়তি হিসেবে ভর করে কোরবানির পশু এবং সহগ হিসেবে যোগ হয় কতগুলো উপাদান, যেমন- হাসিল, চাটাই, কসাই, মসল্লা, কোরবানির আগ পর্যন্ত পশুর খাবার, লৌহ নির্মিত দা, বটি, ছুড়ি ইত্যাদি।
এদিকে সারাদেশে কোরবানির পশুর হাট তো আছেই। এবার রাজধানীর উত্তর সিটির গাবতলী ও দক্ষিণ সিটির সারুলিয়া পশুরহাট ছাড়াও ১৯টি অস্থায়ী হাট বসবে (যেমন: উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় উত্তরা দিয়াবাড়ী (১৬ ও ১৮ সেক্টর); ভাটারা সুতিভোলা খালসংলগ্ন মাঠ; আফতাবনগরের এম ব্লক ও সানভ্যালি এলাকা; মিরপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ড (ইস্টার্ন হাউজিং); মোহাম্মদপুর বছিলা রোড; খিলক্ষেত থানাধীন মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা; ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন মাঠ; মিরপুর কালশী বালুর মাঠ; ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা পর্যন্ত এলাকা ও খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক এলাকা এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে পোস্তগোলা নদীর পাড়; দনিয়া কলেজ ও সনটেক মহিলা মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকা; সাদেক হোসেন খোকা মাঠ ও ধোলাইখাল এলাকা; ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি সংলগ্ন মাঠ; কমলাপুর সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন এলাকা; খিলগাঁও রেলগেট সংলগ্ন এলাকা; রহমতগঞ্জ ক্লাবের পাশে শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকা এবং আমুলিয়া আলীগড় কলেজ সংলগ্ন এলাকা। এসব হাটে ঈদুল আজহার আগের ৫ দিন ধরে পশু বেচাকেনা চলবে। অবশ্য এর মধ্যে ঈদের দিনও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আর এ সকল হাটে ইজারা বাবদ কোটি কোটি টাকার সংশ্লেষ হয়ে থাকে।
যে ভাবেই বলি না কেন, কোরবানি কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব সমাজের সর্বস্তরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে কোরবানির আগে ও পরে এ ঈদকে উপলক্ষ করে হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। এটিকে কেন্দ্র করে লাখো-কোটি মানুষের অস্থায়ী কর্মসংস্থান এবং ব্যবস্থা হয় আয়-রোজগারের। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে দেশের জিডিপিও বৃদ্ধি পায়। প্রতিবছরের মতো এ বছরও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সংখ্যা নিরূপণ করা হয়েছে। এ সূত্র ধরে উল্লেখ্য যে, কোরবানিযোগ্য সর্বমোট ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি গবাদি পশুর সরবরাহ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর হৃষ্টপুষ্টকৃত গবাদি পশুর মধ্যে ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়া এবং ৫ হাজার ৫১২টি অন্যান্য প্রজাতি রয়েছে। বিগত বছরের মতো এবারও কিছু পরিমাণ গবাদি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সরকারি নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি গরু-মহিষ, দুম্বা, ছাগল, ভেড়া ও উটের জন্য বিক্রয়মূল্যের ৫% হারে রাজস্ব দেওয়ার রীতি আছে। সেই হিসেবে এবার শুধু ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ থেকেই সরকারের রাজস্ব পাওয়ার কথা প্রায় ৩০ কোটি টাকা। তাছাড়া অন্যান্য পশু মিলিয়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা। এতদ্ব্যতীত এ বছর কোরবানি হওয়া ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ প্রতিটি চামড়ার মূল্য গড়ে ১ হাজার টাকা ধরলে এর মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৫৬১ কোটি টাকা। আবার ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়ার প্রতিটির চামড়ার মূল্য ১০০ টাকা ধরলেও এ বাবদ ৬৮.৫ কোটি টাকা হতে পারে। মজার ব্যাপার হলো যে, কোরবানি উপলক্ষে গরু এবং ছাগলের চামড়া মিলিয়ে এই পুরো টাকা যাচ্ছে এতিমখানা ও মাদ্রাসাসহ সরাসরি গরিব দুঃখীদের হাতে।
চামড়াশিল্প দেশের প্রধান রপ্তানি খাতগুলোর অন্যতম। আয়ের দিক থেকে দেশে তৈরি পোশাক খাতের পর দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানি পণ্য হলো চামড়া। আবার কোরবানি উপলক্ষে লবণের ব্যবসাও কম নয়? শুধু তাই নয়, চামড়া সংরক্ষণে প্রয়োজন হয় বিপুল জনবলের। আর এ সময় শ্রমিকরা পান তাদের শ্রমের চড়া মূল্য। মোটের ওপর, দেশের বিভিন্ন স্থানে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণেও লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়। সর্বোপরি, সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বাংলাদেশ এখন গরু-ছাগল তথা মাংস উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।
এটা সত্য যে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান। তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুটি ঈদ। এছাড়াও নানা রকম উৎসব প্রতিপালিত হয়। তবে যেকোনো ধর্মাবলম্বীর চেয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব অনেক বড় পরিসরে হয়ে থাকে। আর একে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিভিন্ন আঙ্গিকে অর্থনীতির বিভিন্ন ধারায় অবদান রেখে থাকে। আমরা সবাই অবহিত আছি যে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা বড় ধর্মীয় উৎসব হলেও ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির কারণে মানুষের মনে অধিক রেখাপাত করে থাকে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৮ কোটির মানুষের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ মুসলমান। এবার ভাবুন, এত লোকের এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদ্যাপনের সারথি ধরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বিস্তৃতি কতটা গভীর। এটা সামষ্টিক অর্থনীতিকে বেশ প্রভাবিত করে থাকে।
ক’দিন পরেই ঈদুল আজহা, যা মহাসমারোহে দেশব্যাপী উদ্যাপিত হবে। বর্তমানে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সবাই এই উৎসব নিয়ে ব্যস্ত। যতদূর তথ্যাদি সংগ্রহ করেছি তাতে প্রতীয়মান হয় যে, এবারে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রায় তিনগুণ বেশি ব্যয় হবে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, এই টাকা আসবে কোথা থেকে? এক্ষেত্রে আয়ের উৎস হলো- উৎসব বোনাস; ইনসেনটিভ বোনাস; সঞ্চয়; রেমিটেন্স; ঋণ; উপরি (যদি থাকে); অন্যান্য আয় (পেশাজীবী মহল); বকশিশ ইত্যাদি। মজার বিষয় হলো যে, এই ঈদ উপলক্ষ করে ভিক্ষুকদেরও মোটা অঙ্কের টাকা আয় হয়ে থাকে। যদিও অর্থনীতিতে এটি আয় হিসেবে গণ্য হয় না। তথাপি তারা যখন ব্যয় করে, তখন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে এসে যায়। এদিকে প্রায় উৎসবের অর্থ শহর বা স্থান কেন্দ্রিক হলেও এই বড় উৎসবের সূত্র ধরে প্রচুর টাকা গ্রামে ব্যয়িত হয় বিধায় সারা দেশে বন্টনের দিক দিয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিশেষে বলতে পারি যে, এই উৎসব শুধু ত্যাগ ও আত্মার আত্মীয় হয়ে আনন্দের হিল্লোল বয়ে আনে না। অবস্থাভেদে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলে দেশব্যাপী ভেলোসিটি অব মানির (Velocity of Money) আওতায় কম বেশি বন্টিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বাড়তি সংযোজনমূলক নিয়ামক বললে অত্যুক্তি হবে না।
লেখক : গবেষক, অর্থনীতিবিদ
[email protected]/www.goonijon.com
প্যানেল