
ছবি: সংগৃহীত
চেক এখন আমাদের দৈনন্দিন লেনদেনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না, এই সাধারণ কাগজটির পেছনে রয়েছে এক জটিল এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন—হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন, ১৮৮১ (Negotiable Instruments Act, October 1881)।
এই আইনের মাধ্যমেই চেক সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধ—বিশেষ করে চেক ডিজঅনার বা প্রত্যাখ্যান সংক্রান্ত মামলাগুলো বিচারাধীন হয়। আইনের ১৩৮ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যাংকে কোনও চেক ডিজঅনার হয়, তাহলে সেই চেক সংক্রান্ত অভিযোগ এই ধারার আওতায় আসে।
কীভাবে শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া?
আইনের ১৩৮ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও চেক ডিজঅনার হয়, তাহলে—
চেক ডিজঅনার হওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে, চেকগ্রহীতা (যিনি টাকা পাওয়ার কথা ছিল) চেকদাতাকে একটি লিগ্যাল নোটিস পাঠাবেন, যেখানে চেক ডিসঅনারের বিষয়টি এবং চেকের টাকা ফেরত চাওয়া হবে।
চেকদাতা যেদিন সেই লিগ্যাল নোটিসটি পাবেন, সেই তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে তিনি যদি টাকার পরিমাণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে...
এরপর, পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে, চেকগ্রহীতা যেকোনো এখতিয়ারভুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করতে পারবেন।
মামলা দায়ের করার পর বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। আসামী আদালতে হাজির হলে মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হয়ে যায়। সেখানে:
- চার্জ গঠন
- সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ
- জেরা
- যুক্তিতর্ক
- এবং রায়
—এই সব পর্যায় সম্পন্ন করে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়।
চেক ব্যবহারের নিয়মাবলী সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি
চেক যত ব্যবহৃতই হোক না কেন, এটি ব্যবহারে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় দেখা যায়:
- চেক চুরি হয়ে গেছে
- চেক হারিয়ে গেছে
- জোর করে চেক নিয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে
- এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় মূলত চেক সংরক্ষণ ও ব্যবহারের নিয়ম না জানার কারণে।
কী করণীয়?
প্রত্যেক ব্যাংকের চেক বইয়ের কাভার পৃষ্ঠায় কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী লেখা থাকে। এসব নিয়মাবলী আপনার:
- চেক সংরক্ষণে
- সঠিকভাবে ব্যবহারে
- প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে
- সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সবাইকে অনুরোধ, চেক ব্যবহারের আগে চেক বইয়ের কাভার পৃষ্ঠায় থাকা নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে তা মেনে চলুন। সচেতনতাই চেক সংক্রান্ত জটিলতা ও মামলার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
ফরিদ