শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ, গেজেট প্রকাশ

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট ‘অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ছয়টি পৃথক মামলায় শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ মোট ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই নির্দেশনা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে সরকারি মুদ্রণালয় (বিজিপ্রেস)।

গত ৩ জুলাই ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব স্বাক্ষরিত গেজেট প্রকাশিত হয়, যা নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (প্রসিকিউটর) মীর আহমেদ আলী সালাম।

গেজেটে বলা হয়, মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তারা আত্মগোপনে থাকায় আদালত মনে করছে, ইচ্ছাকৃতভাবে তারা হাজির হচ্ছে না। ফলে ১৯৫৮ সালের ক্রিমিনাল ‘ল’ এমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের ৬(১৩) ধারা অনুযায়ী পরবর্তী ধার্য তারিখে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। অন্যথায়, তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ সম্পন্ন করা হবে।

এর আগে ১ জুলাই আদালত গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানির তারিখ ২০ জুলাই ২০২৫ নির্ধারণ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক, পুতুল, আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সরকারিভাবে নির্ধারিত নিয়ম উপেক্ষা করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নেন বলে অভিযোগ করা হয়।

এই বিষয়ে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং এস.এম. রাশেদুল হাসান ছয়টি পৃথক মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ

• ১৪ জানুয়ারি: উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন শেখ হাসিনাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চারজন যুক্ত হয়ে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ জন।

• একই দিন: সহকারী পরিচালক রাশেদুল হাসান শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্তে আরও দুজন যুক্ত হয়ে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ জন।

• ১৩ জানুয়ারি: শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সালাহউদ্দিন। পরে আসামি হয় ১৭ জন।

• একই দিন: আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে আসামি হয় ১৮ জন।

• ১২ জানুয়ারি: শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন আফনান জান্নাত কেয়া। চার্জশিটে যুক্ত হয় আরও দুজন। সাক্ষী রাখা হয় ১৬ জনকে।

দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী বলেন, “আসামিরা ২০ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু হবে। গেজেট প্রকাশ আদালতের আইনি প্রক্রিয়ার অংশ।”