
ছবি: জনকণ্ঠ
বরগুনার তালতলীতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও যুগ্ম-আহ্বায়কের নেতৃত্বাধীন দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হন। পরে উপজেলা প্রশাসন ও নৌবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘন্টা ব্যাপী লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সদর রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ৪ জনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতের মধ্যে রয়েছেন: আলাউদ্দিন (৪৫), কবির (৩৫), রহিম (৪০), রুবেল (৩৪), সাহাবিদ খান (৪২), আঃ হাই (৫০), সাইদুল (৩৫), নুর মোহাম্মদ (৪৫), মিজান (২৫),সিদ্দিকুর রহমান (৩০), শাকিল (২৭), রবিউল মুসুল্লি (২৬), মহসিন খান (২৭), মানু (৪৫)। বাকিদের তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জানা যায়, সোমবার (৩০ জুন) উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী ও বিএনপি কর্মী মো. আবুল কালাম মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় আহ্বায়ক শহিদুল হকের অনুসারীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। একই সময় মামুন-রিয়াজ নেতৃত্বাধীন অপর গ্রুপও পাল্টা বিক্ষোভ ও সমাবেশে অংশ নেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি। পরে ইউএনও উম্মে সালমা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে এক ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হক বলেন, "আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার জন্য মোস্তাক-মামুন ও রিয়াজ এক লোক দিয়ে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করান। এগুলো দেখে আমার কর্মী সমর্থকরা ও সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিল ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালে মোস্তাক ও মামুন-রিয়াজের নেতৃত্বে আমার কর্মীদের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
সংঘর্ষের বিষয়ে যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মামুন ও যুবদল নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ যৌথভাবে বলেন, "ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও এক ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আমরা উপজেলা বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করি। এ কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা করে। এতে ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা আহত হয়। এবিষয়ে আহবায়ক মো. শহিদুলের বিষয়ে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তালতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প.প কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম বলেন, "আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ৪ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের বরিশাল মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, "দুই পক্ষের সংঘর্ষে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে নৌবাহিনীসহ আমরা এক ঘন্টা র চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে দুই ঘণ্টার জন্য বাজারের দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।"
ছামিয়া