
ছবি:সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে দেশে এক ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এরই প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে একটি বার্তা দিতে চাইলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে দেননি। তবে তার সেই মনোভাব দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনগণের মাঝে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক তৈরি করে।
জামায়াত আমির জানান, এই অস্থিরতা ও আতঙ্কমূলক পরিস্থিতির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি দাবিও সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। প্রধান উপদেষ্টা তার দায়িত্ব নিয়ে পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিলেও তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সামনে আসেনি।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর যাদের হাতে দায়িত্ব এসেছে, তারা নির্দলীয় পরিচয় ধারণ করছেন, যা প্রশংসনীয় হলেও কিছু ব্যতিক্রম সমাজে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, একটি অর্থবহ নির্বাচন চাইলে তার আগে সংস্কার এবং দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি জানান, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সম্মান রেখেই বলেছি, তিনি আমাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দায়িত্বে এসেছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন, বরং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এসেছেন। সেই জায়গা থেকে তিনি যেন জাতির প্রত্যাশা পূরণে কাজ করেন, সেটাই আমাদের কাম্য।”
জামায়াতের পক্ষ থেকে দুইটি বিষয় স্পষ্ট করার দাবি জানানো হয়:
*নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা
*সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমের রোডম্যাপ প্রকাশ
তিনি জানান, যদি সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হয়, তবে ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগেই নির্বাচন হতে পারে। অন্যথায় রমজানের পরপর নির্বাচন আয়োজনের বাস্তবতাও সামনে রাখা উচিত। তবে গ্রীষ্মকালে নির্বাচন না করার সুপারিশও করা হয় দেশের আবহাওয়ার কথা বিবেচনায় রেখে।
তিনি বলেন, “আমরা কেউ প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি। আমরা চাই, তিনি দায়িত্বে থেকেই সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে একটি অর্থবহ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করুন। এই দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।”
সভায় জামায়াত ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল অংশ নেয় এবং বিএনপিসহ সকল দলের মতামত শোনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে জানানো হয়।
জামায়াত আমির শেষ করেন এই বার্তায়: “গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হলো মতভেদ থাকা। ‘Let us agree to disagree’, এই নীতির ভিত্তিতে একে অপরের মতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা একটি অর্থবহ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যেতে চাই। সংস্কার ও নির্বাচনের দুইটি রোডম্যাপ ঘোষণা হলেই সমাজে চলমান অস্থিরতা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
সূত্র:https://youtu.be/cO493bEGNJo?si=giNWPSPbBE8z0t9Z
আঁখি