ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আধিপত্যবাদবিরোধী ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বান

প্রকাশিত: ১৫:৩৫, ২২ মে ২০২৫; আপডেট: ১৫:৩৬, ২২ মে ২০২৫

আধিপত্যবাদবিরোধী ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বান

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আজ দুপুরে তার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন,যেখানে তিনি আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে সচেতনভাবেই একটি কলঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, ছাত্র উপদেষ্টাদের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চাওয়ার গুজব ছড়িয়ে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করার নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এই চক্রান্ত একাধিক দিক থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি জানান, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নিয়ে দলের স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেছেন। গত ২১ মে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত যে সময় দিয়েছেন, আমরা সেটিকে সমর্থন করেছি। এর মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তবে আমরা এর মধ্যে বিচার ও সংস্কারের কথাও বলেছি।”

অন্যদিকে, ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ১০ মে জানিয়েছিলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।” তিনি একাধিকবার নির্বাচন বিষয়ে একই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ প্রশ্ন তোলেন, “দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে?” তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা এবং ইন্টারিম সরকারের অংশ হওয়া দুইজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়া মোটেই স্বাভাবিক নয়।

তিনি আরও সতর্ক করেছেন, “আমাদের সাব-কনশাস মাইন্ডে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সালিশের ক্ষমতা দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অথচ বিএনপি ঐতিহাসিকভাবে সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ভুক্তভোগী দল। আমরা এখনও ওয়ান-ইলেভেনের ইতিহাস ভুলিনি, তারেক রহমানের নির্যাতনের ঘটনাও আমাদের স্মরণে রয়েছে।”

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সতর্ক পাহারাদার। দেশের প্রয়োজনে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। তবে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তরের আকাঙ্ক্ষার মাঝখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেনে নেব না।”

তিনি যুক্ত করেন, “রাজনৈতিক সালিশের সুযোগ দিয়ে আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের পথ প্রশস্ত করা হচ্ছে কি না,সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”

এনসিপি নেতা আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে যারা আমাদের পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমাদের ঐতিহাসিক কৃতজ্ঞতা থাকবে। তবে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে সব পক্ষকে এক থাকতে হবে। বড় কোনো দলের নির্লিপ্ততা আমাদের হতাশ করেছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা, আওয়ামী লীগের বিচার এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করে দ্রুত নির্বাচনে যাওয়ার লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।”

হাসনাত আবদুল্লাহ সতর্ক করেন, “ক্ষণস্থায়ী ফায়দা লুটতে গিয়ে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত বিপুল সম্ভাবনার জনআকাঙ্ক্ষা নষ্ট করলে তা হবে ঐতিহাসিক ব্যর্থতা।”

তিনি বলেন, “আমরা যেন বিভাজনের পথ বেছে না নেই এবং অন্যদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ না দিই। বাইরের কাউকে রাজনৈতিক মাতব্বরি করার সুযোগ না দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলি না। বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও দেশীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হতে হবে।”

 

আফরোজা

×