
ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীর দীর্ঘতম কয়েকটি সমুদ্র সৈকতের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশও। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস – এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বেশি দেখা যায়।
হঠাৎ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মার্কিন সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি ও ভিডিওতে তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ে, যা সাধারণ মানুষের কৌতূহল বাড়িয়ে দেয়। প্রশ্ন উঠেছে—কেন কক্সবাজারে মার্কিন বাহিনীর আগমন?
বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মার্কিন সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের কিছু ছবি ছড়িয়ে যাওয়ার পর এ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় এক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, একটি প্রশিক্ষণের জন্য মার্কিন সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের একটি দল বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। গত ১৮ মে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয় এবং চার দিনের প্রশিক্ষণ শেষে ২১ মে বুধবার সৈকতের হিমছড়ি প্যারাসেলিং পয়েন্টে তা শেষ হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের সিনিয়র স্টাফ অফিসার শাহজাহান শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইউএস এম্বাসির সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিভাগের ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে একটি সিরিজ কোর্স চলছে। এর আগে ২৭ এপ্রিল থেকে ১ মে হাই অ্যাঙ্গেল রেসকিউ ট্রেনিং সম্পন্ন হয়েছে। আর আগামী ৮ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত এমএফআর ট্রেন দ্য ট্রেইনার কোর্স অনুষ্ঠিত হবে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, কক্সবাজারে সুইফট ওয়াটার রেসকিউ ট্রেনিং কোর্স সম্পন্ন করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। কোর্সটি ১৮ মে শুরু হয়ে ২১ মে শেষ হয়। চার দিনের প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়, যা ভবিষ্যতে তাদের পেশাগত উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী বলেন,
"ইউএস এম্বাসির ব্যবস্থাপনায় সেখানে ইউএস আর্মি ও এয়ারফোর্স ছিল। তারা আমাদেরকে ‘সুইফট ওয়াটার রেসকিউ’ প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ১৮ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত চার দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে বিভিন্ন ধরনের উদ্ধার কৌশল শেখানো হয়েছে। যদি কোনো সময় বড় ধরনের সাইক্লোন বা বন্যা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা কীভাবে দ্রুত ভিকটিমকে উদ্ধার করবো—এই দক্ষতা অর্জন করেছি। তারা অত্যন্ত দক্ষ এবং তাদের শেখানো স্কিল আমরা যেকোনো দুর্যোগে ব্যবহার করতে পারব।”
বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রতিবছর ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ প্রশিক্ষণে জলোচ্ছ্বাস, ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা বন্যায় ভেসে যাওয়া মানুষকে উদ্ধারের কৌশল শেখানো হয়েছে।
২০২১ সাল থেকে ইউএস আর্মির সহযোগিতায় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২৮০ জন সদস্যকে মেডিকেল ফার্স্ট রেসপন্ডার কোর্স, হাই অ্যাঙ্গেল রেসকিউ কোর্স সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : https://www.youtube.com/watch?v=Z4mTP5AZV8U
আলিফ