
ছবি: রামপুরার হাতিরঝিল বাসস্ট্যান্ডে মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রদল নেতা সাইফুল
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম, যেখানে বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল দেশের ভেতরের শক্তির বিরুদ্ধে, একটি শাসক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদের লড়াই। এই আন্দোলন ছিল একটি সংগ্রাম, যেখানে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য রাস্তায় নেমেছিল। প্রথমে এটি ছাত্র আন্দোলন হিসেবে সীমাবদ্ধ ছিল, তবে দ্রুতই বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
২০২৪ সালের ১৭ জুলাই থেকে ঢাকার রামপুরা-বাড্ডা অঞ্চলের বিশেষ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই দিনগুলোতে ওই এলাকাগুলোকে ‘মৃত্যুর উপত্যকা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। সেখানে শুরু হয়েছিল তীব্র প্রতিবাদ এবং আন্দোলন, যেখানে শিক্ষার্থী এবং জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাতিরঝিল বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের একটি বড় দল পিছু হটছিল যেখানে মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও বাড্ডার কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে পুলিশকে বাধ্য করে পিছু হটানোর দৃশ্যও সবার সামনে দেখা যায় এই ছাত্রদল নেতাকে।
এই সংগ্রামের একজন অগ্রণী সৈনিক ছিলেন সাইফুল ইসলাম। সাইফুল ইসলামের জন্য ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান একটি বিপদসংকুল মুহূর্ত ছিল, যেখানে তিনি জানতেন যে তার জীবন বিপদগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু তিনি নিজের লক্ষ্য এবং দেশপ্রেমের প্রতি অনুগত থেকে, মৃত্যুকে নিজের সামনে রেখে রাজপথে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ছাদ থেকে পুলিশকে উদ্ধার করার ঘটনা সবারই জানা, কিন্তু তার সংগ্রামের অন্যান্য দিক অনেকেরই অজানা রয়ে গেছে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের পথচলা, আমাদের সংগ্রাম শুধু আমাদের ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়, এটি দেশের জন্য, জাতির জন্য। দল আমাকে কি দিয়েছে বা দিবে, সেটা বড় কথা নয়। আমি দল এবং দেশকে কি দিতে পারি সেটাই বড় কথা। আমরা যখন আন্দোলন করি, যখন রাজপথে নামি, তখন আমরা নিজের জীবনও বাজি রাখি। কারণ, এই দেশ এবং জনগণের জন্য আমাদের দায়িত্ব। এই মুহূর্তে আমি যদি আমার দেশের জন্য কিছু দিতে পারি, যদি জনগণের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারি, তবে সেটাই আমার জীবনের সার্থকতা।
এফএ