ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

এখানে রাজনৈতিক দল হিসেবে আসিনি। আমরা এসেছি এদেশের ১৮ কোটি জনগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ৯ মে ২০২৫; আপডেট: ০৯:২৯, ৯ মে ২০২৫

এখানে রাজনৈতিক দল হিসেবে আসিনি। আমরা এসেছি এদেশের ১৮ কোটি জনগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে

ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে চলমান বিক্ষোভে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এক জোরালো ও আবেগঘন বক্তব্য দেন। আন্দোলনরত নেতা-কর্মী, ছাত্র-জনতা এবং শ্রমজীবী মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সম্মানিত ভাই-বোনেরা, ছাত্র জনতা, সম্মানিত শ্রমিক ভাইয়েরা, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে শুধু একটি সরকারের পতন হয়নি, পতন হয়েছে এক গনহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক শক্তির। এটা ছিল শুধু একজন আওয়ামী নেতার পতন নয়, বরং গত ১৭ বছরের একচেটিয়া রাজনৈতিক আধিপত্যের অবসান।”

 

 

তিনি বলেন, “যারা সে সময় জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন আবু সাইদ মুগ্ধসহ সকল সাহসী যোদ্ধাদের, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।” ড. মাসুদ উল্লেখ করেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ শুধু ২০২৪ সালে নয়, অতীতেও বহুবার গণহত্যার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর, ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে শাপলা চত্বরে চালানো গণহত্যা ছিল তার জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ যখন আওয়ামী লীগের পতনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল, তখন শুধু সরকার পতন হয়নি, বরং তারা গুষ্টিসহ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এবং এই পালানোর ধারা এখনো অব্যাহত।”

 

 

বক্তব্যে ড. মাসুদ আরও বলেন, “আজকে আমরা এখানে রাজনৈতিক দল হিসেবে আসিনি। আমরা এসেছি এদেশের ১৮ কোটি জনগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে। এই ছাত্র জনতাকে নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরার সুযোগ দিতে হলে, গনহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে।” তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “আমাকে যখন বলে, এই জায়গা স্পর্শকাতর, আমি বলি—এই যমুনার চারপাশ যেমন স্পর্শকাতর, তেমনি আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন আরও বেশি স্পর্শকাতর।”

 

 

তিনি অভিযোগ করেন, যখন দেশের জনগণ আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে, তখন কেউ কেউ তা দমন করার চেষ্টা করছে। “যারা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল, তারাই আজ এখানে উপস্থিত। বিজয় ছাড়া দেশের জনগণ আর ঘরে ফিরবে না,” এমন প্রতিজ্ঞাও শোনা যায় তাঁর বক্তব্যে।

ড. মাসুদের এই বক্তব্য বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা জাগায় এবং পুরো যমুনা চত্বর বারবার স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। আন্দোলনের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর এই প্রকাশ্য সংহতি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং এর প্রেক্ষিতে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে এগোবে তা নিয়ে বিশ্লেষক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।

আঁখি

×