ওবায়দুল কাদের
চার ধাপের উপজেলা নির্বাচনের সময় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। শনিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংকালে দলের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনে ভোট হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন ও কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিকটজনদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায়, তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে, তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের এমন সিদ্ধান্তের কারণে তৃণমূলের মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা খুশি হয়েছেন। কারণ- আমি এমপি, আমি মন্ত্রী, তাই আমার ভাই, আমার ছেলে সব পদ নিয়ে যাবে- তা হলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কী করবে? তাদের কী পদে যাওয়ার অধিকার নেই। তাদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।
দলীয় নির্দেশনা দেওয়া হলেও বিভিন্ন উপজেলায় এখনো মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয় নির্বাচনে আছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক। তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে? তবে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে- তা সবাইকে অনুসরণ করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেওয়ার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের (বিএনপি) নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের হয়নি। তবে আমরা জনগণের কাছে বিএনপির সন্ত্রাসের রাজনীতির ব্যাপারে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে পারি। দেশে রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে বিএনপির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন দেশে যদি রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ করতে হয়, তা হলে বিএনপির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কারণ, বিএনপি শুধু আগুনসন্ত্রাস-মানুষ খুন করে না, যারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের পৃষ্ঠপোষকও। বিএনপি জনগণের কাছে আরও বিচ্ছিন্ন, আরও অপ্রাসঙ্গিক করে তোলার প্রয়াস আমরা চালাতে পারি। কারণ, বিএনপি এখন রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেওয়ার মতো গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপিকে কানাডার ফেডারেল আদালত পর্যন্ত সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিএনপি আসলে কোনো রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট্য এখন প্রকাশ করে না। তাদের কর্মকাণ্ডে তারা একটা সন্ত্রাসী দল এটাই তাদের বলছি।
জামায়াতের প্রকাশ্যে রাজনীতি করার বিষয়ে অপর প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জামায়াতের প্রকাশ্যে আসার সুযোগ কোথায়? তারা কি নিবন্ধিত দল? তাদের সুযোগটা কে দিল? সভা-সমাবেশ করতে তো অনুমতি লাগবে। তাদের অনুমতি কে দেবে?
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।