
‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবসা সর্বোত্তম পন্থা’-এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ঢাকার সাভারে সোশ্যাল বিজনেস ডে উদযাপিত হলো।দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্বের ৩৮টি দেশের ১৪ শত প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শতাধিক বক্তা সামাজিক ব্যবসা বিষয়ে তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি, বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, জাপানের ইউগলিনা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং বিদেশি অতিথিসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ আমলারা উপস্থিত ছিলেন। এবারের স্লোগানটি বেশ সুন্দর হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া মৌলিক অধিকার। দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান অনেক ক্ষেত্রেই বেহাল, যদিও এর বাস্তব কিছু কারণও রয়েছে, তদুপরি স্লোগানটি আশা জাগানিয়া।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন সামাজিক ব্যবসা দিবস পালন করা হয় তখন সেটা পরিবারিক মিলনমেলায় পরিণত হয়। কাজ করতে গিয়ে মাঝে-মধ্যে মনে হয় আমাদের শক্তি কমে যাচ্ছে। তখন এ জাতীয় মিলনমেলা আমাদের সবাইকে আবার উদ্দীপ্ত করে। সামাজিক ব্যবসা দিবসকে আমরা সবসময় ব্যাটারি রিচার্জ করার উপলক্ষ হিসেবে দেখি। আমরা সোশ্যাল বিজনেসের মাধ্যমে ‘থ্রি জিরো বা তিন শূন্যের পৃথিবী’ বাস্তবায়ন করতে চাই। যে পৃথিবীতে দরিদ্র থাকবে না।’
আমরা মনে করি দেশের উচ্চশিক্ষিত তরুণদের ব্যবসায় মনোযোগ দিতে হবে। চাকরি খুঁজে খুঁজে জুতার তলা ক্ষয় করার যুগ শেষ করতে হবে। তরুণদের চাকরি প্রত্যাশী না হয়ে, চাকরিদাতা হতে হবে। আমরা জানি, ব্যবসার একটি শক্তি রয়েছে, যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জাপানের মিটসুরু ইজমো, যিনি একজন তরুণ উদ্যোক্তা, যার ছিল না কোনো পরিষ্কার লক্ষ্য। অথচ তিনি শুধু নিজেকে নয়, পুরো জাপানকে পরিবর্তনের পথে আলোকিত করেছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। যুদ্ধবিগ্রহপূর্ণ পৃথিবীর নানা প্রান্তের রাষ্ট্রনায়কদের কার্যক্রম দেখলে সরল চোখে মনে হয়, ভুল পথে চলছে বিশ্ব। মানুষে মানুষে হিংসা বিদ্বেষ বাড়ছে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ দুনিয়াবাসী দেখছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এরপর বিশ্ব দেখল ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের ভয়াবহতা। ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের অমানবিকতা দেখে বিশ্ব বিবেক অস্থির। এই অসম যুদ্ধ কবে শেষ হবে কেউ জানে না।
আমাদের সবার কর্তব্য, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসহ বিবিধ খাতে বৈষম্য ও সীমাবদ্ধতা দূর করে একটি টেকসই, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক মূল্যবোধের সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে বিশ্বকে বদলে দিতে অভিন্ন পথ চলা। নিজেদের শক্তি সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সুন্দর ধরিত্রী বিনির্মাণে এগিয়ে যাওয়া হোক লক্ষ্য।
প্যানেল