ইলিশের চড়া দামে বাজার ঘুরে খালি হাতে যাচ্ছে ক্রেতা

পদ্মা-মেঘনা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি প্রবণতা বাড়লেও চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের সরবরাহ খুবই কম। ইলিশের চাহিদা যেমন আছে, ক্রেতার উপস্থিতিতেও বেশ। তবে চড়া দাম জেনে অনেক ক্রেতাই যাচ্ছেন খালি হাতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়া। এই ঘাটে আগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো। এখন ৫০ থেকে ১০০ মণে এসে দাঁড়িয়েছে।
রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মাছঘাটে অবস্থান করে দেখা গেছে অনেক ক্রেতাই ইলিশের খুচরা দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ একান্ত প্রয়োজন কিংবা দূর থেকে এসেছেন তারা বড় সাইজের দুই একটি ইলিশ ক্রয় করছেন।
রাজধানী থেকে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে আসা রায়হান বলেন, ৪ সহপাঠী লঞ্চযোগে তিন নদীর মোহনায় ঘুরতে এসেছি। মোহনার পাশেই ইলিশ ঘাট। ঘুরে ঘুরে ইলিশের বাজার দেখলাম। তবে এখানে এসে ভিন্ন অভিজ্ঞতা। ইলিশের স্তূপ নেই, আবার দামও বেশি। সাধ্যের মধ্যে হলে ইলিশ কিনে নিয়ে যাব।
চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা জুয়েল বলেন, ঢাকা থেকে অতিথি এসেছে। তাদের ইলিশ কিনে দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। প্রতি কেজি ইলিশ আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা। একটি ইলিশ ২ হাজার টাকায় কিনে পাশের হোটেলে আপ্যায়ন করেছি।
ঘাটের ব্যবসায়ী নবীর হোসেন বলেন, ইলিশের মৌসুম চলছে কিন্তু চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। সারাদেশে চাঁদপুরের ইলিশের ব্যাপক চাহিদার অনুপাতে বাজারে মাছের আমদানি কম। আগে ট্রলারে করে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ চাঁদপুর মাছঘাটে আসত ৪শ’ থেকে ৫শ’ মণ। কিন্তু পদ্মা সেতু হওয়ার পর সেই মাছ এখন আর এই ঘাটে আসে না। এখন ঘড়ের সরবরাহ ৫০ থেকে ১শ’ মণ। সামনে ইলিশের ভরা মৌসুম, নদীর পানি ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ইলিশ ধরা পড়বে। তখন দাম কমবে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
আরেক ইলিশ ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, মাছঘাটে আসা এখনকার ইলিশের সাইজ বড়। এখনকার ইলিশ স্থানীয় নদীর। ছুটির দিনসহ পুরো সপ্তাহজুড়ে ক্রেতাদের আগমন থাকে। অধিকাংশ ক্রেতারা দরদাম যাচাই করে না কিনে চলে যায়। যে কারণে আমাদের বিক্রিও কমেছে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সবেবরাত সরকার বলেন, বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। আর ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। এ ছাড়া এক কেজি ওজনের বড় ইলিশ ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।