ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

আলী রিয়াজ

ঐক্যমত্য কমিশনে আলোচনার নামে দরকষাকষি চলছে

প্রকাশিত: ০২:৩৭, ৩০ জুন ২০২৫

ঐক্যমত্য কমিশনে আলোচনার নামে দরকষাকষি চলছে

ছবি:সংগৃহীত

ঐক্যমত্য কমিশনে আলোচনার নামে দল কষাকষি চলছে বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দাবি করেছে, বিএনপির কারণে মৌলিক সংস্কারের বিষয়গুলো নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অপরদিকে, বিএনপি বলছে, এনসিপি শুধু "জুলাই সনদ" নিয়েই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সব মিলিয়ে দলগুলোর সাথে আলোচনার অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঐক্যমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রিয়াজ।

রোববার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐক্যমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরুতেই ড. আলী রিয়াজ জানান, আলোচনায় কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হলেও তা আশানুরূপ নয়। তিনি বলেন, “জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদে উপনীত হওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে সেটা কতখানি সম্ভব, তা নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। আমরা আন্তরিক থাকতে চাই, চেষ্টা করতে চাই যেন জুলাই মাসের মধ্যে একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে পারি। আমাদের একটা স্বপ্ন ছিল যে আবু সাঈদের শাহাদাৎ বার্ষিকীতেই সবাই মিলে এই সনদে স্বাক্ষর করব। সেটা কতটা সম্ভব হবে, তা আপনাদের ওপর নির্ভর করছে।”

সংসদের উচ্চকক্ষ সংখ্যানুপাতিক হবে নাকি নিম্নকক্ষের আসনের ভিত্তিতে—এ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে এখনো মতৈক্য হয়নি। সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি গঠন নিয়েও বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল একমত নয়। উচ্চকক্ষ গঠনের ক্ষেত্রে কেউ কেউ বলছেন, এতে "রাজনৈতিক ঘুষ" দেওয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে।

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনার জন্য ১০টি এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। “এই তিনটি নিয়েই যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে ভবিষ্যতে বাকি বিষয়গুলোতেও অগ্রগতি সম্ভব হবে।”

বিএনপির অভিযোগ, তাদের মতামতের বাইরে গিয়ে জাতীয় সনদে সই করার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তরিকতা বিএনপিই দেখিয়েছে। এখন যদি আমাদেরকে ১০০% প্রস্তাবে একমত হতে বলা হয়, তাহলে আলোচনা ডাকার প্রয়োজন ছিল না। ঐক্যমত মানে হলো—সব দলের যেসব বিষয়ে একমত হবে, সেগুলো নিয়েই জাতীয় সনদ হবে। যদি আমাদের বাধ্য করা হয় সব বিষয়ে একমত হতে, সেটা সঠিক হবে না।”

নেতারা বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে নতুন পথ তৈরি হচ্ছে, যা ঐক্যমতে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।”

অনেকেই মনে করছেন, বড় রাজনৈতিক দলগুলো এখনো চায় রাষ্ট্র পরিচালনার পুরনো ধারা অব্যাহত থাকুক। আবার অনেকে বলছেন, ঐক্যমত্য কমিশনের উচিত হবে আগে বিএনপির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা। তা না হলে অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় সময় ও শক্তির অপচয় হবে।

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/zTROFHkpiy4?si=sWN33je3hnGLG3fC

মারিয়া

×