
ছবি:সংগৃহীত
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা শুরু করতে পারে। তার এই মন্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বোমাবর্ষণ হয়তো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে পুরোপুরি থামাতে পারেনি।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, "তাদের সক্ষমতা এখনও আছে। কয়েক মাসের মধ্যেই তারা আবার সেন্ট্রিফিউজ চালিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে। হয়তো তারও কম সময় লাগবে।"
তিনি আরও বলেন, "খোলাখুলিভাবে বললে, কেউ এটা বলতে পারে না যে সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সেখানে এখনো অনেক কিছু রয়ে গেছে।"
বোমা বর্ষণ আর যুদ্ধ:
এই মাসের শুরুতে ইসরায়েল প্রথমে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রও এতে যোগ দেয়, ফলে ১২ দিন ধরে চলা এক রক্তক্ষয়ী বিমান যুদ্ধ শুরু হয়।
এই হামলায় ইরানের ফোর্ডো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যায়।
ইরান যদিও বারবার বলছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি একেবারেই শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, তবুও পশ্চিমা বিশ্ব মনে করে—এই হামলা ইরানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে সাময়িকভাবে থামাতে পারলেও, তাদের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ‘পিছিয়ে নেওয়া’ সম্ভব নয়।
“জ্ঞান মুছে ফেলা যায় না”—গ্রোসি:
আইএইএ প্রধান বলেন, "ইরান একটি পরমাণু প্রযুক্তিতে দক্ষ দেশ। আপনি এই দক্ষতাকে অস্বীকার করতে পারবেন না। একবার শিখে গেলে সেটা আর ভুলে যাওয়া যায় না।"
এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন—যদি ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও হামলার কথা বিবেচনা করবে।
গ্রোসি আরও জানান, বোমা বর্ষণের আগে ইরান তাদের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ কোথায় সরিয়ে রেখেছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যা শান্তিপূর্ণভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যেমন ব্যবহৃত হতে পারে, তেমনি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্যও ব্যবহারযোগ্য। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ইরানের এই সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
আইএইএর পর্যবেক্ষণ চললেও এই ঘটনাপ্রবাহে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
তথ্যসূত্রঃ রয়টার্স
মারিয়া