
ছবি: সংগৃহীত
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় ছয় ইহুদি বসতকারীকে আটক করেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সম্প্রতি কাফর মালিক নামক এক ফিলিস্তিনি গ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনজন নিহত হন। এর কিছুদিন পর একটি নিষিদ্ধ সামরিক এলাকায় কয়েকজন ইহুদি বসতকারীর গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, বিভিন্নভাবে নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর কটূক্তি ও হামলা চালায়। এমনকি বাহিনীর গাড়িতে ভাঙচুর করে এবং গাড়িচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আইডিএফ বলেছে, “নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ওপর যেকোনো ধরণের সহিংস আক্রমণ বরদাশতযোগ্য নয়। দায়িত্ব পালনরত সদস্যদের ওপর হামলা হলে আমরা কঠোরতম ব্যবস্থা নেব।”
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “এ ধরনের হামলাকারীরা পশ্চিম তীরের ইহুদিদের প্রতিনিধিত্ব করে না। অধিকাংশ বসতকারী আইন মেনে চলে এবং অনেকেই আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে সেবা দিয়েছেন।” তিনি দ্রুত ও কঠোর তদন্তের আহ্বান জানান।
ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ অভিযুক্তদের ‘বিপজ্জনক অপরাধী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “তারা আমাদের সেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে রাষ্ট্রের শত্রুদের হাত শক্তিশালী করছে।”
বামপন্থী ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতা ইয়ার গোলান বলেন, “এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে গণতান্ত্রিক ও ইহুদি ইসরায়েলকে ধ্বংসের চেষ্টা।” তিনি সরকারের ডানপন্থী মন্ত্রীদের, বিশেষ করে ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোতরিচের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন।
অন্যদিকে, অর্থমন্ত্রী স্মোতরিচ, যিনি পশ্চিম তীরের বসতিগুলোর সংযুক্তিকরণের পক্ষে, তিনি অভিযোগ করেন—আইডিএফ ইহুদি বসতকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। তিনি এর তদন্ত দাবি করেন এবং বলেন, “আইডিএফ ও বসতকারীরা এক এবং অভিন্ন, তবে ইহুদিদের ওপর গুলি চালানো গ্রহণযোগ্য নয়।”
এ বিষয়ে আইডিএফ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনী কোনো বসতকারীর দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে নি। বরং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা কেবল ফাঁকা গুলি ছুড়েছিল।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন অবৈধ হলেও, এসব আইন উপেক্ষা করেই ইসরায়েল বসতি সম্প্রসারণ চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ গত মাসে নেতানিয়াহু সরকার পশ্চিম তীরে আরও ২২টি নতুন বসতি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
মুমু ২