ধর্ষণের ঘটনা রাজনীতিকরণ না করে কঠোর পদক্ষেপ নিন: আমীর খসরু

নারী নির্যাতনের ঘটনায় সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, “বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, এসব ভয়াবহ অপরাধকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”

শনিবার (২৯ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কানাডিয়ান হাইকমিশনার অজিত সিং-এর বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, “এইসব ধর্ষণের ঘটনাকে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। যারা এসব অপরাধ করছে, তারা আইনের আওতায় আসছে না। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে রক্ষা পাচ্ছে, ফলে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার এখন ধর্ষণের মতো অপরাধকেও রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যাতে করে নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়া যায়। এটা একদিকে যেমন অনৈতিক, তেমনি ভয়াবহ সামাজিক বার্তাও দিচ্ছে।”

কুমিল্লার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে অভিযোগ

কুমিল্লার সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কে বা কারা করেছে, তা সবাই জানে। আমি যতটুকু জানি, এটি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একজন ব্যক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। এটি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই নয়, বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকাতেও এসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “কারও রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেই যদি সে অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, তাহলে আইনের শাসন বলে কিছু থাকবে না। মানুষ বিচার চাইবে কোথায়?”

জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে চায় সরকার

বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, “এইসব ঘটনার রাজনীতিকরণ করে সরকার মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে চায়। যাতে প্রকৃত ব্যর্থতা ও অব্যবস্থাপনা আড়াল করা যায়। ধর্ষণের মতো একটি জঘন্য অপরাধের বিচার না করে বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করা হচ্ছে— এটি এক ধরনের কৌশল, যাতে সরকার নির্বাচনী সুবিধা আদায় করতে চায়।”

বিচার ও জবাবদিহিতার দাবি

তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। ধর্ষণ বা নারী নির্যাতনের ঘটনার বিচার দল-মত নির্বিশেষে করতে হবে। অপরাধী কে, সেটাই মূল বিষয়— সে কোন দলের তা নয়। এই মানসিকতা যদি না বদলায়, তাহলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও গভীর হবে।”

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আমীর খসরু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকেও নারীর নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।