
ছবি: সংগৃহীত।
প্রতিদিন বিছানায়, বাথরুমে বা চিরুনিতে কিছু চুল পড়ে থাকতে দেখা অনেককেই দুশ্চিন্তায় ফেলে। কিন্তু সত্যিই কি এই চুল পড়া উদ্বেগের কারণ? চুল পড়া নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে, বিশেষ করে কতটুকু পড়া স্বাভাবিক তা নিয়ে।
এই বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অনন্যা শর্মা। ১৩ জুন তার ইন্সটাগ্রাম পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, “প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০টি চুল পড়া একেবারেই স্বাভাবিক। এটি শরীরের স্বাভাবিক চক্রেরই অংশ।”
ডা. অনন্যা বলেন, “একটি চুল সারাজীবন মাথায় থাকে না। এটি ধারাবাহিক এক চক্রের মধ্য দিয়ে যায়: অ্যানাজেন (বৃদ্ধি) → ক্যাটাজেন (পরিবর্তন) → টেলোজেন (বিরতি) → এক্সোজেন (ঝরার ধাপ) → কেনোজেন (খালি ফলিকল) → এবং পুনরায় অ্যানাজেন।”
প্রায় এক লক্ষ চুলের ফলিকল মাথার ত্বকে থাকে, যার ১০–১৫ শতাংশ যেকোনো সময় ঝরার পর্যায়ে থাকে। ফলে প্রতিদিন কিছু চুল পড়া একদমই অস্বাভাবিক নয়।
চুল লম্বা হলে পড়া চুলের পরিমাণ বেশি মনে হয় বলে জানান ডা. অনন্যা। “একটি লম্বা চুল পাক খেয়ে পড়লে তা গোছার মতো দেখায়, যা বাস্তবে কম হলেও অনেক বেশি মনে হয়। আবার গোসলের পর যেসব চুল পড়ে সেগুলোর বেশিরভাগই আগেই ঝরেছে কিন্তু জট লেগে ছিল,” বলেন তিনি।
তিনি পরামর্শ দেন, “গোসলের ৬-৭ ঘণ্টা পরে আবার চিরুনি চালিয়ে দেখুন, চুল পড়া অনেকটাই কমে গেছে মনে হবে।”
ডা. অনন্যা আরও বলেন, “রূপচর্চা শিল্প যেকোনো চুল পড়াকে অস্বাভাবিক হিসেবে তুলে ধরছে। আগে যেসব চিকিৎসা (যেমন মিনোক্সিডিল) প্যাটার্ন হেয়ার লসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো, এখন সেগুলোকেও অপ্রয়োজনীয় বলে প্রচার করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আজ থেকে পাঁচ বছর আগে এত বেশি মানুষ চুল পড়া নিয়ে অভিযোগ করতেন না। রূপচর্চা পণ্যের বাজার বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে এসব উদ্বেগও বেড়েছে।”
ডা. অনন্যা সাবধান করে বলেন, “যদি মনে করেন আপনার চুল পড়া মাত্রাতিরিক্ত, তবে দয়া করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। বিজ্ঞাপন-ভিত্তিক অ্যাপের ‘প্যাকেজে’ টাকা নষ্ট করবেন না। আমার বাসার কাজের দিদি তাদের প্রলোভনে পড়ে নিজের অর্ধেক বেতন খরচ করে ফেলেছিলেন, অথচ পরে আমাদের কাছে এসেই সঠিক চিকিৎসা পান।”
সূত্র: https://short-link.me/164KW
মিরাজ খান