ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ জুন ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ!

আশরাফুল ইসলাম সবুজ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, পাইকগাছা, খুলনা

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২৯ জুন ২০২৫

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ!

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রফিকুল ইসলামের সুপারিশের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কাশিমনগর গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা।

রবিবার (২৯ জুন) সরেজমিনে স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কপিলমুনি ইউপির কাশিমনগর এলাকার বাসিন্দা আশালতা হালদার (৬৫)। তার এক ছেলে সত্যজিৎ ও দুটি মেয়ে মুক্তি আর মমতা। কিন্তু ছেলে সত্যজিতের মনে হঠাৎ বাসনা জেগে ওঠে সমুদয় সম্পত্তি আত্মসাৎ করে একাই ভোগদখল করার। এর ফলস্বরূপ সত্যজিৎ সম্পত্তির লোভে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে কৌশলে ম্যানেজ করে জীবিত মাকে মৃত দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ হতে নিয়েছেন ওয়ারিশ কায়েম সনদ।

গত ৩১ মে স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রফিকুল ইসলামের সুপারিশের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ আলী মোড়ল স্বাক্ষরিত ওয়ারিশ কায়েম সনদটি সত্যজিতকে প্রদান করা হয়। তবে এ ঘটনাটি জানাজানি হলে গত ২০ জুন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একটি সালিশি বৈঠকে জনরোষের মুখে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন বলে জানান স্থানীয়রা।

সর্বশেষ এ ঘটনায় গত শনিবার (২৮ জুন) বিকালে আশালতা হালদার নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে স্থানীয় মালোপাড়া দুর্গা মন্দিরে স্বশরীরে হাজির হয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন এবং মিথ্যা ওয়ারিশ কায়েমের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, বসতবাড়ি ও সম্পত্তি আত্মসাতের হীন মানসিকতায় আমার ছেলে সত্যজিৎ এমনটি করেছে।

এদিকে আশালতার দুই মেয়ে মুক্তি সরকার, মমতা বিশ্বাস ও জামাই ঠাকুর দাস বিশ্বাসসহ এলাকাবাসী জানান, সালিশি বৈঠকের পর থেকে সত্যজিৎ বসবাসের ঘরে তালা দিয়ে পলাতক রয়েছে। অসহায় আশালতা নিজ ঘরে ঠাঁই না পেয়ে অন্যের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ ঘটনায় জড়িত কপিলমুনির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস আলী মোড়ল আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “এটি আমার ভুল হয়েছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন জানান, “ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সানজানা

×