ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস: স্বাধীন তথ্যপ্রবাহের পথে প্রতিজ্ঞা হোক আজকের অঙ্গীকার 

সোহাইল আহমেদ

প্রকাশিত: ১৮:৩২, ৩ মে ২০২৫; আপডেট: ১৮:৩২, ৩ মে ২০২৫

বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস: স্বাধীন তথ্যপ্রবাহের পথে প্রতিজ্ঞা হোক আজকের অঙ্গীকার 

৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এটি শুধু একটি আন্তর্জাতিক দিবস নয়-মুক্তচিন্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং জনগণের জানার অধিকারকে সামনে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। এই দিবসটি স্মরণ করিয়ে দেয়-একটি স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র পূর্ণতা পায় না, আর জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশের সংবিধানে বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার সুস্পষ্টভাবে স্বীকৃত। এই মূল্যবোধের আলোকে আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, পেশাদার সাংবাদিকতার পরিবেশ এবং তথ্যপ্রবাহের অবাধতা বজায় রাখতে পারি-যা একটি সচেতন সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি যতই এগিয়েছে, ততই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও এসেছে নতুন চ্যালেঞ্জ।


বিশেষ করে ডিজিটাল মাধ্যমে ভুল তথ্য, গুজব ও বিভ্রান্তিকর প্রচারের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায়। এসব নিয়ন্ত্রণে ২০১৮ সালে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং পরবর্তীকালে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হলেও, এর কিছু ধারা নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে কিছু উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব আইনের কিছু সংজ্ঞা স্পষ্ট না হওয়ায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় কখনো কখনো সীমাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। তাই ভবিষ্যতে এসব আইনকে আরও জনবান্ধব, স্পষ্ট ও ভারসাম্যপূর্ণ করার উদ্যোগ সকল পক্ষের অংশগ্রহণে গ্রহণ করা যেতে পারে-যাতে স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধের মধ্যে একটি সুন্দর ভারসাম্য রক্ষা হয়।

বর্তমানে তথ্য অধিকার আইনও আমাদের হাতে রয়েছে, যা তথ্যপ্রাপ্তির একটি সাংবিধানিক ভিত্তি। তবে এ আইনের প্রয়োগ যেন আরও কার্যকর হয়, সে লক্ষ্যে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজতর এবং সময়োপযোগী করার প্রয়োজন রয়েছে।

এই দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা হতে পারে-গঠনমূলক, দায়িত্বশীল ও স্বাধীন সাংবাদিকতা যেন দেশের উন্নয়ন, মানবাধিকার রক্ষা এবং জনস্বার্থে সত্য প্রকাশে ভূমিকা রাখা। গণমাধ্যম সমাজের আয়না—এই আয়নাটি যেন সবসময় স্বচ্ছ ও বিকৃতিমুক্ত থাকে, সেটাই হোক আমাদের সকলের চাওয়া।

সর্বোপরি, বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস হোক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জবাবদিহিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনার এক বিশেষ সুযোগ।

 

লেখকঃ সোহাইল আহমেদ
কলামিস্ট, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক ও সংগঠক

রিফাত

×