ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩

সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে

সম্পাদকীয়

মাত্র এক মাস পরেই সংসদ নির্বাচন। এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সতর্ক ও সচেতন রয়েছে বলেই গণমাধ্যমে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম করছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে জনকণ্ঠে। এই টিম জেলা ও মেট্রোপলিটান এলাকায় কাজ করবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কঠোর ভূমিকাই পালন করবে। ইতোমধ্যে রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়েও।

এ অপরাধে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার নির্দেশনাও আসছে। ইতোমধ্যেই আমরা দেখেছি যে, আচরণবিধি লঙ্ঘনের কাজ সংসদ সদস্যরা যেমন করছেন, তেমনি অন্য প্রার্থীরাও করছেন। এটি নিঃসন্দেহে অগ্রহণযোগ্য। দুঃখজনক হলো, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের তালিকায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও রয়েছেন। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত ২৪ প্রার্থীকে শোকজ দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। প্রতিদিনই নোটিশ পাচ্ছেন নির্বাচন বিধিমালা ভঙ্গকারীরা। 
নিয়ম অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণবিধির আওতায় পড়ে যান সবাই। অথচ, নির্বাচনের প্রচার শুরুর দিন না আসা পর্যন্ত এখন যেভাবে পোস্টার-ব্যানার লাগানো হচ্ছে বা শোডাউন-মিছিল করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা, তার সবই অবৈধ। দেশে সবচেয়ে বেশি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়ে থাকে শোডাউন-মিছিল ও পোস্টার লাগানোর বিষয়ে। সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এবং এর সংশোধনী (২০১৩) অনুযায়ী কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌ-যান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল করা যাবে না কিংবা কোনো শোডাউন করা যাবে না।

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ও মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। অপরদিকে সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, বিল্ডিং, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটিতে বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। তবে দেশের যে কোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল রশিতে ঝুলিয়ে টাঙানো যাবে। 

নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার একটি রুটিন কাজ। এবারেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে আশা করা যায়। তবে দেখতে হবে, এই কাজ কতটা আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে। অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসী গাটছড়া বাঁধা। সন্ত্রাসীরা নির্বিঘœ থাকলে নির্র্বাচনে বিঘ্ন ঘটবেই, ভোটাররাও নিরাপদ বোধ করবেন না। সংগত কারণেই নির্বাচন কমিশন চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে। তবে শুধু নির্দেশ প্রদানই নয়, সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটাও পর্যবেক্ষণের আওতায় আসা দরকার। এতে একদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটারদের যেমন আস্থা বাড়বে, তেমনি প্রার্থীরাও আইন মেনে চলতে বাধ্য হবেন। একটি সর্বাঙ্গীণ সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।

×