ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

ইসলাম ছাড়া শান্তি নেই, পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচনের ভবিষ্যৎ দেখছেন মুফতী রেজাউল করিম

প্রকাশিত: ০২:২৩, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০২:২৩, ৪ জুলাই ২০২৫

ইসলাম ছাড়া শান্তি নেই, পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচনের ভবিষ্যৎ দেখছেন মুফতী রেজাউল করিম

দেশের রাজনীতিতে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত, ইসলাম ছাড়া দেশের কল্যাণ, শান্তি ও মানবতার রক্ষা সম্ভব নয়। তিনি আরও মনে করেন, দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য এবং নির্বাচনব্যবস্থায় পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক অনুপাত) পদ্ধতির বাস্তবায়ন।

সম্প্রতি এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মুফতী রেজাউল করিম বলেন, “ইসলাম দেশ মানবতার কল্যাণের জন্যে। বিগত ৫৩ বছর তারা দেশ পরিচালনা করেছে। তারা অনেক অংশে ইসলামপন্থীদেরকে, ওলামায়ে কেরামদেরকে বিভিন্ন কায়দায় বোকা পেয়ে ধোঁকা দিয়েছে। আমাদেরকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে। ইসলাম দেশ মানবতার কল্যাণ তাদের থেকে আমরা পাই নাই।”

তিনি অভিযোগ করেন, তাদের শাসনামলে দেশের দুর্নীতি আন্তর্জাতিকভাবে নজরে এসেছে। বলেন, “আমরা দেখেছি তাদের পরিচালনায় এই দেশটা একবার দুইবার নয়, পাঁচবার চোরের দিক থেকে তামাম দুনিয়ায় ফাস্ট বানিয়েছে। এদের পরিচালনায় হাজার হাজার মা তাদের সন্তান হারিয়েছেন, গুম হয়েছেন অনেকে, আয়নাঘর তৈরি হয়েছে।”

বর্তমান শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই পরিচালনায় আমরা দেশের কল্যাণ, ইসলামের কল্যাণ, মানবতার কল্যাণ কিছু পেয়েছি? আবার নতুনভাবে এরা ক্ষমতায় আসবে, ইসলামের উপকার করবে। এই ধরনের মাথায় চিন্তা কে ঢুকায়? এটা তো অসম্ভব, এটা হতেই পারে না।”

পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “পিআর পদ্ধতিতেও ঐক্য থাকা দরকার আছে। কারণ যখন ইসলামপন্থিরা একত্রে আওয়াজ তুলবে, তখন মানুষ আন্তরিকতা দেখাবে, ইসলামপন্থীদের ভোট বেশি দেবে। দ্বিতীয়ত, যদি কোন দল এমপি পাওয়ার মতো পার্সেন্টেজ না পায়, তাহলেও ঐক্য থাকলে পরামর্শ ভিত্তিক দায়িত্বশীলদের সংসদে পাঠানো যাবে।”

তিনি বলেন, “আমরা যদি একত্রে থাকতে পারি, তাহলেই স্বার্থান্বেষীরা কখনোই দেশের স্বার্থের বিরোধী, ইসলামের বিরোধী, মানবতার বিরোধী কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।”

দেশ গঠনে ইসলামী ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলার পাশাপাশি তিনি আশা প্রকাশ করেন, “আল্লাহ একটা পরিবর্তন ঘটাবেন।”

আওয়ামী লীগ সরকারপ্রধানের সমালোচনা করে বলেন, “বুড়ি হাসিনা পালায় না! বাস্তবতা হলো ভাত পাক করেও খেয়ে যেতে পারে না, ঠিক করে কাপড় চোপড় গোছাতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ আসলে বাস্তবতা হল ইসলাম। ইসলাম নীতি আদর্শের বাইরে কখনোই দুনিয়ার শান্তি আসে নাই, আসতে পারে না।”

৫ আগস্টের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “তখন ইসলামপন্থীরা নামছে দেশ রক্ষার জন্য, বিচারহীনদের জান-ইজ্জতের নিরাপত্তার জন্য। আর এক শ্রেণী নেমেছিল চাঁদাবাজি, জায়গা দখল, টেন্ডারবাজি, স্টেশন দখলের জন্য। ইসলামপন্থীরা নেমেছিল দেশের স্বার্থে।”

তিনি জানান, “আমরা চাই ইসলামপন্থী এবং দেশপ্রেমিকরা একত্র হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। নির্বাচনের সমালোচনার মধ্য দিয়েই পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ।”

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “বড় দল হিসেবে তারা পিআর সিস্টেমে গড়িমসি করছে। তারা হয়তো এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বলেই পিআরের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে।”

পিআর পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এটা এমন একটা ব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি ভোটারের ভোটের মূল্যায়ন হয় এবং ফ্যাসিস্ট তৈরির রাস্তা বন্ধ হয়। কালো টাকা আর পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য বন্ধ করার জন্য পিআর অত্যন্ত কার্যকর।”

তিনি বলেন, “এখন বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল পিআরের পক্ষে। শুধু বিএনপির দিক থেকেই বাধাটা বেশি আসছে। কিন্তু দেশের কল্যাণে, ইসলামের স্বার্থে, মানবতার স্বার্থে পিআর আজ সময়ের দাবি।”

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/2n47en4e

আফরোজা

×