ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ফাহাম আব্দুস সালাম

‘আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম, যেই তরুণরা কোটার বিরুদ্ধে ফাইট করতে গিয়ে স্বৈরাচারকে নামিয়ে দিলো, সেই তরুণরাই এখন কোটা চাইছেন মেয়েদের জন্য’

প্রকাশিত: ০১:০৫, ১৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ০১:০৬, ১৬ জুন ২০২৫

‘আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম, যেই তরুণরা কোটার বিরুদ্ধে ফাইট করতে গিয়ে স্বৈরাচারকে নামিয়ে দিলো, সেই তরুণরাই এখন কোটা চাইছেন মেয়েদের জন্য’

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাম আব্দুস সালাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম আমাদের যেই তরুণেরা কোটার বিরুদ্ধে ফাইট করতে গিয়ে একটা স্বৈরাচারকে নামিয়ে দিলো, সেই তরুণেরাই এখন কোটা চাইছেন। মেয়েদের জন্য। দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানে। সত্যিই দুৰ্ভাগ্যজনক! আপনারা তরুণ। কিছু কথা আপনাদের বলি। আজকে অযাচিত ভবিষ্যৎবাণী শোনাবে। ৩০ বছর পর হয়তো আমি থাকবো না। আপনারা মিলিয়ে দেখবেন। সংসদে নারী কোটা মেয়েদেরকে রাজনীতি থেকে আরো দূরে সরাবে।

আপনারা এমন এক দল মেয়েকে পার্লামেন্টে পাবেন যারা হবে মানুষের সাথে সম্পর্কহীন ও এনটাইটেলড। তারা বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা না, নিজেরা যা শিখে এসেছে ইংরেজি বইতে সেই সব দর্শনের বাস্তবায়ন করবে। ও করার চেষ্টা করবে। ইয়েস! আপনারা একদল অযোগ্য মেয়েকে পার্লামেন্টে পাবেন। যারা পিকিউলিয়ার সব ফীল-গুড কথা বলবে। এবং নিজেদের ক্লাসের সমস্যাকে পুরা দেশের সমস্যা মনে করবে।

একটা কথা মনে রাখবেন। এই পৃথিবীতে কোনো এডাল্টকে যখন একজন ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে এহসান করে, দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই লাভবান হয়। উভয়ই মনে করে যে এই ব্যবস্থা সাময়িক। ফলে ‘এহসান’ পরিপূর্ণতা পায়। কোনো প্রতিষ্ঠান (যেমন সরকার) যখন কোনো এডাল্টকে পৃথিবীর শ্ৰেষ্ঠ নিয়তে এহসান করে, যে প্রাপক সে কোনোদিন এই এহ্সানকে এহসান মনে করে না। মনে করে ‘অধিকার’। এই এহসান তার মধ্যে অযাচিত ঔদ্ধত্বই শুধু সঞ্চার করে। আর রিজেন্টমেন্ট। ইয়েস! আপনারা এমন একদল মেয়েকে পার্লামেন্টে পাবেন যারা মোস্ট প্যাশনেটলি রাজনীতিকে ঘৃণা করবে। সেই সিস্টেমটাকেই সে ঘৃণা করবে যেই সিস্টেম তাকে ওখানে নিয়ে গেছে। আপনারা লিখে রাখতে পারেন।

আপনারা বুঝতেই পারছেন না যে যেখানে যেই ছেলে ক্যান্ডিডেট ১৫ বছর ধরে লেগেছিলো, সেই একই সীটে বিএনপি ও জামায়াত, সেই ক্যান্ডিডেটের বউ ও মেয়েকে নমিনেশান দেবে। এইবারে না হলেও পরের বারে দিবে। এবং সেই গৃহিনী আপনাদেরকে হারিয়ে পার্লামেন্টে যাবে। অথোরিটি হবে ছেলে রাজনীতিবিদের আর রেসপনসিবিলিটি হবে তার স্ত্রী কিংবা মেয়ের। রেসিপি ফর ডিজাস্টার। যা আপনি ডিজার্ভ করেন না কিন্তু পেয়ে যান কোনো সিস্টেমের চাতুরীতে সেই সিস্টেম সমাজে শুধু বিভেদই বাড়ায়। মেয়ে এমপিদের মোস্ট প্যাশনেটলি দুধভাত মনে করা হবে। আপনি মনে করতে পারেন যে সংরক্ষিত সীটে নির্বাচন করলে কেউ আপনাদের দুধভাত মনে করবে না। নো! গার্নিশ হিসেবে আম দেয়া দুধভাত হবেন আপনারা।

এফার্মেটিভ একশান কখনোই সেই ফল বয়ে আনে না যেই ফলের জন্য এফার্মেটিভ একশানটা নেয়া হয়েছিলো। একটা ছেলে রাজনীতিবিদকে যতোই গালি দেন, সে রক্ত পানি করা পরিশ্রম করে। তারেক রহমানের কথা চিন্তা করেন। উনি এখনো পার্লামেন্টে যান নাই কিন্তু প্রায় ৩০ বছর ধরে রক্ত পানি করা পরিশ্রম করেছেন। এই কথাটা ১০০% সত্য এবং এবারই হয়তো তিনি প্রথম পার্লামেন্টে যাবেন। ঐ একই অর্জন যদি শুধুমাত্র মেয়ে হওয়ার জন্য পেয়ে যাবে, আপনি কি মনে করেন যে আপনার কলিগদের রেস্পেক্ট আপনি পাবেন? নো! আপনারা এক ডেস্ট্রাক্টিভ কাজে মাতোয়ারা হয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের যে ভোটের আশায় সব দলই এই ডেস্ট্রাক্টিভ কাজে সায় দিচ্ছে। একটা মানুষ নাই যে এই গ্লেয়ারিংলি রং কাজে আপত্তি জানিয়েছে।

পুনশ্চঃ (কিছুদিন আগে আমি বাথরুমে বসে ফোনে আমার শশুরকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম কেন নারী কোটায় সায় দেয়া উচিত হবে না। হুট করে আমার স্ত্রী বাথরুমে ঢুকে ছোঁ দিয়ে ফোনটা কেড়ে নিয়ে চলে যায়। আমি বুঝি যে এই ইস্যুতে আমি ১০০% সঠিক হলেও এই দেশ একটা বিহারীর কথা মেনে নেবে না। কেউই মেনে নেবে না কারণ সবাইকেই বাড়িতে লাঞ্চ করতে হয়। ডিনার করতে হয়। তারেক রহমান সাহেবের বাড়িতে তিনজন মেয়ে। কোনোভাবেই এই যুদ্ধে জেতার সম্ভাবনা নাই প্রিয় দেশবাসী) 

রিফাত

×