
ছবি: সংগৃহীত
নীল সমুদ্রের ঢেউ ছাপিয়ে হঠাৎ আকাশ ছুঁতে চায় একটি ডলফিন কিংবা ডলফিনের দল। মাথা উঁচিয়ে দৃষ্টি মেলে, তারপর ঘূর্ণি দিয়ে আবার জলে ফিরে আসে। দেখলে মনে হয়, যেন কোনো খেলা খেলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ডলফিন কেন লাফ দেয়?
এটা কেবল খেলার ছল নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত কারণ।
একটি বড় কারণ—যোগাযোগ
ডলফিন দলবদ্ধভাবে চলে। কিন্তু পানির নিচে দূরে থাকা সঙ্গীদের দেখা যায় না সহজে। তাই তারা শব্দের মাধ্যমে যোগাযোগ করে।
লাফ দিয়ে পানিতে পড়লে যে তীব্র শব্দ হয়, তা অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। কিছু প্রজাতির ডলফিন, যেমন স্পিনার ডলফিন, এই কৌশল ব্যবহার করে সঙ্গীদের অবস্থান জানায়—বিশেষ করে রাতে।
দ্রুত চলার জন্যও লাফ
সমুদ্রে চলতে গেলে পানি প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। সেই প্রতিরোধ এড়াতে তারা মাঝেমধ্যে লাফ দেয়। বাতাসে তারা বেশি দ্রুত গতিতে চলতে পারে এবং কম শক্তি খরচ হয়।
শিকার ধরার কৌশল
ডাসকি ডলফিনের মতো কিছু প্রজাতি লাফ দিয়ে পানিতে পড়ে এমন শব্দ তৈরি করে, যাতে করে মাছরা ভয় পেয়ে এক জায়গায় জড়ো হয়ে পড়ে—যার ফলে শিকার ধরা সহজ হয়।
অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি তাড়াতে লাফ
রেমোরা নামে একধরনের মাছ ডলফিনের গায়ে লেগে থাকে। তারা ক্ষতি না করলেও গতি কমিয়ে দেয়। তাই লাফ দিয়ে ডলফিন সেই মাছগুলো ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে।
মজা করাও একটি কারণ
ডলফিন অত্যন্ত বুদ্ধিমান প্রাণী। তারা খেলাধুলা, কসরত, এমনকি ঠেলা-ধাক্কাও করতে ভালোবাসে। কখনো একে অপরকে ধাক্কা দেয়, আবার কখনো সমুদ্রের কচ্ছপ বা শৈবালের সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠে। লাফ দেওয়াটাও তাই অনেক সময় নিছক আনন্দের প্রকাশ।
ডলফিনের লাফ একাধারে বিজ্ঞান, আচরণ ও আনন্দের মিশেল। তারা লাফ দেয়—কখনো সঙ্গীদের জানাতে, কখনো শিকার ধরতে, আবার কখনো শুধুই খেলার ছলে।
সূত্র: দ্য কনভারসেশন।
রাকিব