
ছবি: সংগৃহীত
প্রচণ্ড গরমে ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে অনেকের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক আবহাওয়াতেও অতিরিক্ত ঘাম হতে দেখা যায়, বিশেষ করে হাত-পা, মুখ বা বগলের মতো অংশে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে হাইপারহাইড্রোসিস বলা হয়। এটি শুধুমাত্র অস্বস্তিকর নয়, বরং সামাজিক অস্বস্তির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু অভ্যাস ও চিকিৎসায় এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
🔍 অতিরিক্ত ঘামের সম্ভাব্য কারণ:
হরমোনজনিত সমস্যা: থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, কিংবা মেনোপজের সময় হরমোনের তারতম্যে ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
মেডিকেশন সাইড ইফেক্ট: কিছু ওষুধ (যেমন এন্টিডিপ্রেসেন্ট বা ডায়াবেটিসের ওষুধ) অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে।
চিন্তা বা টেনশন: মানসিক চাপে অনেকেই ঘামতে শুরু করেন।
সংক্রামক ব্যাধি বা জ্বর: শরীরে সংক্রমণ থাকলে ঘাম বেড়ে যায়।
জেনেটিক কারণ: পরিবারে কারো অতিরিক্ত ঘাম হলে সেটা উত্তরাধিকারসূত্রে আসতে পারে।
✅ করণীয় ও প্রতিকার:
🧴 ১. ভালো অ্যান্টিপার্সপিরেন্ট ব্যবহার করুন
ডিওডোরেন্ট নয়, এমন অ্যান্টিপার্সপিরেন্ট বেছে নিন যা ঘামের গ্রন্থিকে সাময়িকভাবে ব্লক করে রাখতে সক্ষম।
🧊 ২. ঠান্ডা পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন
গরম ও আর্দ্রতা ঘাম বাড়িয়ে তোলে। সম্ভব হলে এসি রুমে থাকুন বা ফ্যানের নিচে বিশ্রাম নিন।
💧 ৩. পানির পরিমাণ বাড়ান
প্রচুর পানি পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং ঘাম কম হয়।
🍃 ৪. ক্যাফেইন ও ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন
চা, কফি, ঝাল ও প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ফলে ঘাম বেড়ে যায়।
🧘♂️ ৫. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক প্রশান্তি এনে ঘাম কমাতে সাহায্য করে।
🧼 ৬. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
প্রতিদিন স্নান ও পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করুন যাতে ঘামের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ না হয়।
🧑⚕️ ৭. প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি ঘামের মাত্রা অস্বাভাবিক হয় ও দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন ঘটায়, তবে ডার্মাটোলজিস্ট বা এন্ডোক্রিনোলজিস্টের শরণাপন্ন হোন।
ঘাম হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু তা যদি দিনের যেকোনো সময় অস্বাভাবিক হারে হয়, ঘুমের মধ্যে ঘাম হয়, ওজন হ্রাস বা অন্য কোনো লক্ষণ থাকে—তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নিন। কারণ এটি হতে পারে শরীরের ভেতরের কোনো জটিল সমস্যার লক্ষণ।
আঁখি