ছবিঃ সংগৃহীত
সকালে খালি পেটে এক গ্লাস ডাবের পানি পান করলে শরীরে ঘটে যেতে পারে দারুণ কিছু পরিবর্তন। ভরপুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই প্রাকৃতিক পানীয় শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমকে মৃদু ও প্রাকৃতিকভাবে উদ্দীপিত করে। বিশেষ করে সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে খালি পেটে এটি পান করলে উপকারিতা হয় বহুগুণে।
এই প্রসঙ্গে ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ডা. রিদ্ধিমা খামসেরা বলেন, “সকালে খালি পেটে ডাবের পানি পান করার সময়টিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় পেট সর্বাধিক পরিমাণে পাচক রস উৎপন্ন করে এবং প্রায় তিনগুণ বেশি পুষ্টি শোষণ করতে সক্ষম হয়। তাই দিনের শুরুতে এক গ্লাস টাটকা ডাবের পানি পান করুন এবং এরপর অন্তত ১৫–২০ মিনিট কিছু খাবেন না।”
কেন ডাবের পানি এত উপকারী?
ডা. রিদ্ধিমা ব্যাখ্যা করেন, নারকেল পানি হচ্ছে একমাত্র প্রাকৃতিক পানীয় যার ইলেকট্রোলাইট গঠন মানব রক্তের প্লাজমার মতোই। এটি খালি পেটে পান করলে শরীর কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াই সরাসরি রক্তপ্রবাহে মিশে যায় এবং কোষে প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও প্রাকৃতিক চিনি পৌঁছে দেয়। ফলে শরীর পায় একটি প্রাকৃতিক শক্তির উত্স।
খালি পেটে ডাবের পানি পান করলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়:
১. শরীর থেকে টক্সিন দূর করে
নারকেল পানিতে থাকা লরিক অ্যাসিড হজমতন্ত্রের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। তবে এটি কেবল খালি পেটে খেলে কার্যকর হয়; খাবারের সঙ্গে খেলে এটির অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল শক্তি কমে যায়।
২. কিডনির জন্য উপকারী
রাতভর কিডনি শরীরের টক্সিন ছেঁকে ফেলে। সকালে এটি পুনরায় কার্যকর হতে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের প্রয়োজন হয়। ডাবের পানিতে এই মিনারেলগুলো সঠিক অনুপাতে (২৫:১) থাকে, যা কিডনিকে সহায়তা করে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে।
৩. ক্যাফেইনের চেয়ে ভালো শক্তির উৎস
কফির মতো হঠাৎ উত্তেজনা নয়, বরং নারকেল পানি ধীরে ধীরে প্রাকৃতিকভাবে শক্তি জোগায়। এতে থাকা গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ ধাপে ধাপে রক্তে মিশে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেয়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম শরীরের ৩০০টিরও বেশি এনজাইমে সহায়ক, যার অভাবে মানুষ ক্লান্ত বোধ করে।
৪. ত্বকের গুণগত মান বৃদ্ধি করে
ডাবের পানিতে থাকা সাইটোকিনিন নামক উদ্ভিজ্জ হরমোন কোষ পুনর্গঠনে সহায়ক এবং অ্যান্টি-এজিং গুণে ভরপুর। খালি পেটে খেলে এটি দ্রুত রক্তে মিশে কোলাজেন উৎপাদন ও ত্বক কোষের পুনরায় গঠনে কাজ করে। মাত্র কয়েক সপ্তাহেই ত্বকে উজ্জ্বলতা ও আর্দ্রতা দেখা যায়।
৫. ওজন কমাতে সহায়ক
ডাবের পানিতে থাকা মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস (MCTs) চর্বি হিসেবে জমা না হয়ে সরাসরি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এ ছাড়া এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করে, ফোলাভাব কমায় এবং প্রাকৃতিকভাবে মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
যারা সকালে কফির বদলে স্বাস্থ্যকর কোনো বিকল্প খুঁজছেন, তাদের জন্য নারকেল পানি হতে পারে আদর্শ সমাধান। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস ডাবের পানি আপনার শরীর ও ত্বকে আনতে পারে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন—অবশ্যই খালি পেটে।
সূত্রঃ hindustantimes
নোভা
