ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

কুড়িগ্রামে বন্ধুকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের জালে আটক দুই বন্ধু

রাজু মোস্কুতাফিজ, কুড়িগ্রাম |

প্রকাশিত: ১৯:০১, ১৬ জুন ২০২৫

কুড়িগ্রামে বন্ধুকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের জালে আটক দুই বন্ধু

প্রেমের বিষয় পরিবারে ফাঁস করায় ১০ হাজার টাকার ইয়াবা কিনে বন্ধুকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন দুই বন্ধু। পুলিশের সন্দেহভাজন তদন্তে ধরা পড়ে মোটরসাইকেলের সিটের নিচে ইয়াবা রেখে ফাঁসানোর গল্প। শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাকারী দুই বন্ধুকে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায়।

আটক আসামিরা হলেন—ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অনন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে জুয়েল হক এবং নাগেশ্বরী উপজেলার এগারো মাথা সাতকুড়ারপাড় এলাকার আছকের আলীর ছেলে মনির হোসেন। তাদের মধ্যে জুয়েল হক ছিলেন মূল পরিকল্পনাকারী এবং মনির সহযোগী।

নাগেশ্বরী থানার এসআই অপূর্ব কুমার জানান, শনিবার রাতে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি থানার মুঠোফোনে জানান যে, নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারো মাথা বাজারে এক ব্যক্তির মোটরসাইকেলের সিটের নিচে ইয়াবা রয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাজার থেকে মোটরসাইকেলটি আটক করে সিট ও যন্ত্রাংশ খুলে ৬৭টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।

মোটরসাইকেলের মালিক মিলন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ঠাটারীটারী গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে। পুলিশের সন্দেহ হয় ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। পরে বাজার থেকেই সোর্স মনিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, জুয়েলের কথায় তিনি পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।

এরপর রবিবার ভোরে জুয়েলকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জুয়েল স্বীকার করে, প্রেমসহ ব্যক্তিগত বিষয় পরিবারে জানানো নিয়ে মিলনের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়েছিল। এ কারণেই মিলনকে ফাঁসাতে মনিরের সহায়তায় পরিকল্পনা করেন।

জুয়েল পুলিশের কাছে আরও স্বীকার করেন, ১০ হাজার টাকায় ইয়াবা কিনে দু’দিন আগে মিলনের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে গিয়ে সিটের নিচে তা রেখে দেন। পরে মনিরকে দিয়ে পুলিশে খবর দেন।

এই ঘটনায় নাগেশ্বরী থানার এসআই অলকান্ত রায় বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই প্রভাত চন্দ্র রায় জানান, রবিবার বিকালে দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, “সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে মোটরসাইকেলসহ ইয়াবা উদ্ধারের পর সন্দেহ হলে কৌশলে সোর্সদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জানা যায়, ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে পরিকল্পনা করে ইয়াবা রাখা হয়েছে। পরিকল্পনাকারী ও সোর্সকে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

সজিব

×