
ছবিঃ সংগৃহীত
রানের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপছে ইসরাইল। শহর থেকে শহরতলি, সর্বত্রই বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একের পর এক হামলায় ছড়িয়ে পড়ছে ধ্বংসস্তূপ, রক্ত আর ছিন্নভিন্ন ভবন। তবে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম—এ যেন এক প্রযুক্তির কীর্তি!
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের এই জীবনরক্ষার মূল অস্ত্র হলো সেনাবাহিনী পরিচালিত Home Front Command অ্যাপ। এই অত্যাধুনিক মোবাইল অ্যাপটি যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলার অন্তত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগেই সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে নাগরিকদের মোবাইলে। সময়মতো এমন বার্তা পেয়ে সাধারণ মানুষ দ্রুত আশ্রয় নিচ্ছেন আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কার, বোমা প্রতিরোধী রুম বা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আগাম সতর্কতাই বড় ধরনের প্রাণহানী ঠেকিয়ে দিচ্ছে। ইরানের ছোঁড়া অসংখ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ইসরাইলের বিভিন্ন অংশে আঘাত হানলেও, জনগণের পূর্বপ্রস্তুতি প্রাণ রক্ষা করছে শত শত মানুষের।
তবে প্রযুক্তি নির্ভর এই সুরক্ষা ব্যবস্থাও নিখুঁত নয়। শনিবার (১৪ জুন) রিশন এলাকায় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সময়মতো কোনো সতর্কবার্তা পৌঁছায়নি। ফলে সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তদন্ত করে ত্রুটি সংশোধন করেছে।
চলমান পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় ইসরাইলজুড়ে রিজার্ভ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। স্কুল, কলেজ ও সাধারণ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। শুধুমাত্র জরুরি সেবা চালু রয়েছে। নাগরিকদের কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না নতুন নির্দেশ আসে, ততক্ষণ যেন তারা আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ না করে। এমনকি কোনো ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং যদি বোমা প্রতিরোধী না হয়, তাও আশ্রয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের যেকোনো মুহূর্তে নতুন হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ কারণেই ইসরাইল তার নাগরিকদের বাঁচাতে স্মার্ট প্রযুক্তি, পরিকল্পিত আশ্রয় ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা প্রস্তুতি কাজে লাগাচ্ছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—এই ডিজিটাল প্রতিরক্ষা কৌশল আর কতদিন ধরে রাখতে পারবে ইসরাইল?
আলীম