ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

মৃত্যুকূপ ’ফটিকছড়ির ধুরুং খাল’, এক দশকে প্রাণ হারিয়েছে ২০ জনেরও বেশি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ১৬ জুন ২০২৫

মৃত্যুকূপ ’ফটিকছড়ির ধুরুং খাল’, এক দশকে প্রাণ হারিয়েছে ২০ জনেরও বেশি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে প্রবাহমান ধুরুং খাল এক ভয়ংকর বিপদসংকুল জলপথে পরিণত হয়েছে। এ উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৭৫টি ছড়া ও খাল রয়েছে। কোনটি বর্ষাকাল ছাড়া প্রায় ১০ মাস শুকনো থাকে, আবার কিছু খালে সারা বছরই পানির প্রবাহ বিদ্যমান। এ ধরনেরই একটি খাল হলো ধুরুং খাল। গেল এক দশকে এই খাল পার হতে গিয়ে কিংবা গোসল করতে নেমে অন্তত ২০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

সর্বশেষ, গত ৭ জুন ফটিকছড়ি পৌরসভা এলাকায় ধুরুং খালে গোসল করতে গিয়ে সায়মান (৮) নামে এক শিশু মৃত্যুবরণ করে। প্রতি বছর গড়ে ২ থেকে ৩ জনের মৃত্যু ঘটে এই খালে, যার কারণে এটি স্থানীয়দের কাছে ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে পরিচিত।

ধুরুং খাল ফটিকছড়ি উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এবং হালদা নদীর একটি উপনদী। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে খালটি ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকা হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। একসময় এটি কৃষিকাজ, বিশেষ করে রবি মৌসুমে সেচের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। খালটি কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হলেও এখন অনেকাংশে মৃত্যুঝুঁকির উৎস হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে রোববার (১৬ জুন) দুপুরে, উপজেলার কাঞ্চননগর মানিকপুর গ্রামের মহিষের ঘোনা এলাকায়। সেখানে গোসল করতে গিয়ে নানি-নাতনি—শাহানু বেগম (৪৫) ও মুনতাহা (৮)—মর্মান্তিকভাবে পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। নিহত শাহানু বেগম ওই গ্রামের মৃত বদিউল আলমের স্ত্রী এবং শিশু মুনতাহা মোহরম আলীর কন্যা।

এ বিষয়ে কাঞ্চননগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. রমজান আলী জানান, নদীতে ডুবে নিখোঁজ হওয়ার পর এলাকাবাসীর তৎপরতায় নানি-নাতনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “মর্মান্তিক এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে ব্যথিত। স্থানীয়দের পাশাপাশি থানা পুলিশ ও ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।”

সজিব

×