ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে আর্থিক লাভ কার?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ১৬ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে আর্থিক লাভ কার?

ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পটভূমিতে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে রাশিয়া। আজকের রাশিয়ার পত্রিকাগুলোর প্রধান শিরোনাম জুড়েই রয়েছে এই অঞ্চলভিত্তিক সংঘাত এবং রাশিয়ার সম্ভাব্য লাভ-ক্ষতির হিসাব।

প্রভাবশালী রুশ দৈনিক মস্কভস্কি কোমসোমোলেটস স্পষ্ট ভাষায় বলেছে— “এটা যতই নির্দয় শোনাক না কেন, এই সংঘাত রাশিয়ার জন্য কিছু কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনছে।”

কী সেই সুবিধা?

প্রথমত, সংঘাতের ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, যা রাশিয়ার অর্থনীতির জন্য লাভজনক।

রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাবিষয়ক পত্রিকা ‘কোমারসান্ত’ বলেছে, যদি মধ্যপ্রাচ্যে (যেমন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে) যুদ্ধ বা বড় কোনো সমস্যা হয়, তাহলে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ততটা মনোযোগ দিতে পারবে না।

এর মানে হলো, তারা ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্র বা সামরিক সহায়তা কমিয়ে দিতে পারে, কারণ তাদের মনোযোগ তখন মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ নিয়েই বেশি থাকবে।

এই পরিস্থিতি রাশিয়ার জন্য ভালো, কারণ তখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার উপর চাপ কিছুটা কমে যাবে।

কোমারসান্ত মনে করে, রাশিয়া একধরনের নিরপেক্ষ আরবিটারের ভূমিকা নিতে পারে— যারা হয়তো পুরো সংকট সমাধান করতে পারবে না, তবে অন্তত সংঘাত প্রশমন বা ডি-এসকালেশন ঘটাতে পারে। এর মাধ্যমে মস্কো মধ্যপ্রাচ্যে নিজের প্রভাব আরও বাড়াতে পারে।

রাশিয়ার ব্যবসাভিত্তিক পত্রিকা 'কোমারসান্ত' শুধু সুযোগের কথাই বলেনি, বরং তারা সতর্কও করেছে। তারা বলেছে, ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে এই যুদ্ধ বা উত্তেজনা রাশিয়ার জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।

কারণ, কিছুদিন আগেই (মাত্র পাঁচ মাস আগে) রাশিয়া ইরানের সঙ্গে একটা বড় ধরনের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার চুক্তি করেছে। এটাকে বলা হয় "কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি"—যা সাধারণত দুই দেশের মধ্যে গভীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্কের প্রতীক।

কিন্তু এখন, সেই ইরানের ওপর ইসরায়েল বিশাল আকারে বিমান হামলা চালিয়েছে, আর রাশিয়া কিছুই করতে পারেনি বা কোনোভাবে সেই হামলা ঠেকাতে পারেনি। এটা রাশিয়ার ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য নেতিবাচক হতে পারে।
বিশেষ করে, ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ এখন ভাবতে পারে, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেও আসলে নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়।

অর্থাৎ, কৌশলগত লাভের আশায় থাকা রাশিয়ার জন্য এটা আবার কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।

মুমু ২

×