ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

হাড়ের ক্যান্সারের ৫টি উপসর্গ, যা আমরা প্রায়ই উপেক্ষা করি

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ১৬ জুন ২০২৫

হাড়ের ক্যান্সারের ৫টি উপসর্গ, যা আমরা প্রায়ই উপেক্ষা করি

ছবিঃ সংগৃহীত

হাড়ের ক্যান্সার একটি বিরল কিন্তু গুরুতর রোগ। এর উপসর্গগুলো অনেক সময় এতটাই সাধারণ এবং নীরব থাকে যে তা খুব সহজেই অবহেলা করা হয়। দৈনন্দিন ব্যস্ততা, বয়সজনিত ব্যথা কিংবা হালকা আঘাত ভেবে আমরা এসব উপসর্গকে গুরুত্ব দেই না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে—এই সাধারণ মনে হওয়া লক্ষণগুলোর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে মারাত্মক হাড়ের ক্যান্সার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহ সবসময় সংকেত দেয়—তা যতই সূক্ষ্ম হোক না কেন। সেই সংকেতগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। নিচে এমন ৫টি উপসর্গ তুলে ধরা হলো, যেগুলোকে প্রায়ই আমরা উপেক্ষা করে থাকি:

১. রাতে বাড়তে থাকা নিঃশব্দ ব্যথা:
লিম্বে বা শরীরের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে স্থায়ী ও নিঃশব্দ ব্যথা আমরা সাধারণত ক্লান্তি, খারাপ ঘুমের ভঙ্গি কিংবা মাংসপেশির সমস্যার কারণে বলে ধরে নিই। তবে হাড়ের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই ব্যথা সাধারণত গভীর এবং হাড়ের ভেতর থেকে আসে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ব্যথা রাতে বা বিশ্রামের সময় আরও তীব্র হয়ে ওঠে।

২. হঠাৎ দেখা দেওয়া ফোলা বা গাঁঠ:
কোনো ব্যথাহীন ফোলা জায়গা বা নরম গাঁঠ অনেক সময় আমরা মশার কামড়, আঘাত বা চর্বি জমে থাকা সিস্ট বলে ধরে নিই। কিন্তু এটি হতে পারে হাড়ের ক্যান্সারের প্রথম দিকের লক্ষণ। সময়ের সাথে সাথে এই ফোলা জায়গা শক্ত ও ব্যথাযুক্ত হয়ে উঠতে পারে।

৩. সামান্য আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়া:
বয়সের কারণে হাড় ভেঙে যাওয়া স্বাভাবিক বলেই আমরা ভাবি। কিন্তু হাড়ের ক্যান্সারে “প্যাথলজিকাল ফ্র্যাকচার” দেখা যায়, যেখানে সামান্য ধাক্কা বা পড়ে যাওয়া থেকেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। কারণ, টিউমার হাড়ের ভেতরের গঠন দুর্বল করে দেয়।

৪. অস্বাভাবিক ও স্থায়ী ক্লান্তি:
দিনের শেষে ক্লান্ত বোধ করা স্বাভাবিক, কিন্তু হাড়ের ক্যান্সারজনিত ক্লান্তি আলাদা। এটি এক ধরনের গভীর ও নিরবিচারে চলা অবসাদ, যা বিশ্রামেও কমে না। কারণ, ক্যান্সার হাড়ের মজ্জায় রক্ত তৈরি প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়, যার ফলে অ্যানিমিয়া ও অতিরিক্ত ক্লান্তি দেখা দেয়।

৫. হঠাৎ ও অকারণে ওজন হ্রাস:
অনেক সময় ওজন কমে গেলে আমরা তা খুশি মনে গ্রহণ করি বা স্ট্রেস, ডায়েট ইত্যাদির ফল মনে করি। কিন্তু হাড়ের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে শরীরের বিপাকক্রিয়ার পরিবর্তন হয়, যা খিদে কমায় এবং শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর হার বাড়ায়। ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে ওজন কমতে থাকে। যদি এই লক্ষণটি হাড়ের ব্যথা বা ক্লান্তির সাথে দেখা দেয়, তাহলে তা অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখা প্রয়োজন।

আপনার করণীয়:
উপরোক্ত উপসর্গগুলোর যেকোনোটি যদি আপনার শরীরে দীর্ঘসময় ধরে থাকে, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

সতর্কতা নয়, সচেতনতা:
হাড়ের ক্যান্সার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে ভয় নয়—জরুরি সচেতনতা। সঠিক সময়ে শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যায়।

সূত্রঃ timesofindia

নোভা

×