
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডির) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নারীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার সুযোগ দিতে হবে। নারী ও পুরুষের জন্য সর্বজনীন ভোট দিতে হবে। তিনি বলেন, এতে প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ বাস্তবায়িত হলে আনুপাতিক বিতর্ক এড়ানো যেতে পারে।
রবিবার রাজধানীর কাওরান বাজারে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সংসদে সরাসরি ভোটে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন: প্রয়োজনীয়তা, চ্যালেঞ্জ ও সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মনোনয়নে নারীদের অগ্রাধিকার বিষয়টি সহজ। নারী কমিশন নিয়ে যা হয়েছে, তা অনভিপ্রেত। সংরক্ষিত নারী আসনের নারী এমপিরা হীনম্মন্যতায় ভোগেন। তিনটি সংসদীয় এলাকা তাকে দেখতে হয়। কিন্তু সে অবস্থান অনেকের থাকে না। অনেকের দলীয় প্রভাবও থাকে না।
তিনি বলেন, যদি নারীর শক্তিশালী অবস্থান বা শ্রম শক্তিতে অংশগ্রহণ না থাকে, বা তারা বাল্যবিয়ের শিকার হন, তাহলে তো নারীর কোনো অগ্রগতি হলো না। নারী কিন্তু অবিভাজিত জনশক্তি নয়। সমাজের বিভিন্ন সেক্টরে নারীদের অবস্থান কতটুকু।
সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘একই সংসদীয় আসনে নারী-পুরুষের দ্বৈত প্রতিনিধিত্ব সম্ভব নয়। এটি গ-গোল বাড়াবে। তবে সংরক্ষিত নারী আসন একশতে উন্নীত করতে বিএনপি একমত। সংরক্ষিত আসনের নারীরা যেন হীনম্মন্যতায় না ভোগেন সে বিষয়টিও দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নারীদের বাস্তবিক উন্নয়ন হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে নারী কমিশনকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। নারীদের মর্যাদা নেই। এমন বাস্তবতায় সংসদে নারী এমপির সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই বিবেচনা করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়েও নারীদের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। বিশেষ করে উপজেলা পরিষদেও তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। তবে রাতারাতি সব পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাতে হলে নারী প্রার্থীকে কমপক্ষে দুই বছর আগে পরিচয় করাতে হবে। তাহলে তিনি জনগণের সঙ্গে স্বাভাবিক হতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রেও যাকে মনোনয়ন দিলে দল জিতবে, দল তাকেই মনোনয়ন দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অথচ ঐতিহাসিকভাবেই নারীদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাদের তেমন মূল্যায়ন করা হয় না। বিগত জুলাই আন্দোলনে নারীদের অবস্থান থাকলেও সেখানেও অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন।’ সামাজিক মাধ্যমে নারীদের হয়রানির বিষয়ে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান শামা ওবায়েদ।
আলোচনায় নারীর ক্ষমতায়ন এবং রাষ্ট্র-কাঠামো ও রাজনীতিতে নারীর সুষ্ঠু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আগামী সংসদে নারী প্রতিনিধিদের সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্বাচনী আইন ও সংবিধানে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।