ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানের হামলায় ধ্বংস ইসরায়েলের বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৯:০৬, ১৬ জুন ২০২৫

ইরানের হামলায় ধ্বংস ইসরায়েলের বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান

ছবিঃ সংগৃহীত

ইরানের পাল্টা আক্রমণে ইসরায়েলের অন্যতম স্ট্র্যাটেজিক গবেষণা কেন্দ্র ওয়েইজমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, রবিবার ভোররাতে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভবনটিতে ভয়াবহ আগুন ধরে যায় এবং বহু মানুষ সেখানে আটকা পড়ে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইরানের এই হামলা শুধু একটি স্থাপনার ওপর হামলা নয়—বরং এটি ইসরায়েলের বিজ্ঞান, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি ব্যবস্থার ওপর এক কৌশলগত আঘাত। বিশ্ববিখ্যাত এই ইনস্টিটিউটটি বহু দশক ধরে সামরিক প্রযুক্তি ও পারমাণবিক গবেষণায় সরাসরি অবদান রেখে আসছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই হামলা ইসরায়েলের জন্য এক বড় ধাক্কা। কারণ, ওয়েইজমান ইনস্টিটিউট শুধু গবেষণাগার নয়, এটি এমন এক শক্তির কেন্দ্র, যেখান থেকে ইসরায়েলের আধুনিক প্রতিরক্ষা কৌশল, এআই প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা এবং পরমাণু সক্ষমতা বিকাশ লাভ করে।

হামলায় ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন গবেষণা ভবন ও ল্যাবরেটরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিট কাজ করছে। তবে ভেতরে এখনও অনেকে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইনস্টিটিউটের ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রি বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিল। যদিও ইসরায়েল কখনোই তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের অস্তিত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, তবু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওয়েইজমান ইনস্টিটিউট ইসরায়েলের পারমাণবিক কর্মসূচিতে গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে আসছিল।

ওয়েইজমান ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), উন্নত অস্ত্র প্রযুক্তি, সাইবার প্রতিরক্ষা এবং উপগ্রহ প্রযুক্তিতে অগ্রগতি লাভ করেছে। এই হামলার ফলে সেই ধারাবাহিকতা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

এই হামলার পর ইসরায়েলি প্রশাসনের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বিস্তারিত বিবৃতি না এলেও, নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, “এটি ইরানের পক্ষ থেকে কৌশলগত বার্তা—যে এখন শুধু সামরিক নয়, বৈজ্ঞানিক সক্ষমতাকেও লক্ষ্যবস্তু করা হবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ওয়েইজমান ইনস্টিটিউটের ওপর হামলা কেবল প্রতীকী নয়—বরং কৌশলগত বার্তা বহন করে। ইরান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা শুধু সামরিক নয়, বরং ইসরায়েলের বৈজ্ঞানিক শক্তির কেন্দ্রেও আঘাত হানতে প্রস্তুত।

এ হামলা ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে—যেখানে লক্ষ্যবস্তু কেবল সামরিক ঘাঁটি নয়, বরং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুও।

সূত্রঃ https://youtu.be/V5QJt1JnnRk?si=3cYGVO4rqeSPrjzm

নোভা

×