
ছবি: জনকণ্ঠ
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র তাপদাহ বিরাজ করছে। আবহাওয়ার এই বৈরী অবস্থায় শুধু মানুষই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মৎস্য খাতও। বিশেষ করে খোলামাঠের পুকুরে মাছ চাষে সরাসরি প্রভাব পড়ছে তাপমাত্রার বৃদ্ধি। পানি দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠায় অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, ফলে মাছের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। এমন অবস্থায় মৎস্য খামারিদের প্রয়োজন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা।
তীব্র গরমে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন খামারিরা। পানি দ্রুত উত্তপ্ত হওয়ায় মাছ খাওয়া বন্ধ করে দেয়।অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়, বিশেষ করে গভীর রাতে ও ভোরবেলা। কিছু মাছ ভেসে উঠে অক্সিজেনের জন্য হাঁসফাঁস করে। পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা মারাত্মক ক্ষতিকর।
খাদ্যদ্রব্য দ্রুত পচে পানিকে দূষিত করে ফেলে। পুকুরে কমপক্ষে ৫-৬ ফুট গভীরতা রাখলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রয়োজনে পুকুরে অতিরিক্ত পানি ঢালুন। পুকুরে নিয়মিত পানি প্রবাহ রাখুন। প্রয়োজনে এয়ারেটর বা অক্সিজেন পাম্প ব্যবহার করুন। গরমের সময় মাছ কম খায়, তাই অতিরিক্ত খাদ্য না দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে সরবরাহ করুন এবং খাদ্যদ্রব্য ভালোভাবে শুকিয়ে ব্যবহার করুন।
পুকুরের আশপাশে গাছ লাগানো থাকলে ছায়া পড়ে এবং তাপমাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। খালি পুকুরে ভেসে থাকা কচুরিপানা বা অস্থায়ী ছাউনি দিয়েও ছায়া তৈরি করা যেতে পারে।
পানিতে অ্যামোনিয়া, নাইট্রাইট বা pH এর মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে চুন বা জলজ উদ্ভিদ ব্যবহার করে পানি পরিশোধন করুন।
প্রতিদিন সকালে মাছের গতিবিধি ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন। ব্যতিক্রম কিছু দেখলেই দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
উপজেলা মৎস্য অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিন। তীব্র তাপদাহে সচেতন ব্যবস্থাপনা গ্রহণ না করলে মৎস্য খাত বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া জরুরি। সরকারি সহযোগিতা ও প্রযুক্তিনির্ভর চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করলেই এই দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব। আপনার এলাকার তাপমাত্রা ও পানির অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পেতে যোগাযোগ করুন স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে।
আবির