ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কর ফাঁকি দিয়ে দেশে ঢুকছে কোটি কোটি টাকার ভাগ্য বদলের পাথর, কিন্ত ভাগ্য কি বদলাচ্ছে মানুষের?

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২৩ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:৪৪, ২৩ মে ২০২৫

কর ফাঁকি দিয়ে দেশে ঢুকছে কোটি কোটি টাকার ভাগ্য বদলের পাথর, কিন্ত ভাগ্য কি বদলাচ্ছে মানুষের?

শখের বশে পাথরের আংটি কিনতে আজিমপুর থেকে এসেছেন খান আকাশ। গুলিস্তানের টুইন টাওয়ার মার্কেটের নিচতলার একটি দোকানে তিনি বললেন, “আমি পাথরের আংটি পড়তে ভালোবাসি, তবে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য নয়। এটা একেবারেই আমার ব্যক্তিগত রুচি।”

গুলিস্তানের এই বাজারটিই দেশের অন্যতম বড় পাথরের আংটির কেন্দ্র। দোকানিরা জানান, এখানে প্রতি মাসেই লক্ষ লক্ষ টাকার পাথরের আংটি বিক্রি হচ্ছে। এক দোকানি বলেন, “আমরা পুরাতন বার্মিজ রুপি বিক্রি করি, যা এখন অনেকটা দুষ্প্রাপ্য। ২০১৩-১৪ সালের দিকে আমরা একটি আংটি ২২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি।”

এই বাজারে ৩০ থেকে ৪০ রকমের পাথরের আংটি পাওয়া যায়—নীলা, পোখরাজ, গোমেদ, রুবি, মুক্তা, মেসোনাইট সহ আরও অনেক ধরনের পাথর। এসব আংটির দাম ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আংটি ব্যবহারের উদ্দেশ্য বিভিন্ন। কেউ শারীরিক বা মানসিক সমস্যা সমাধানের আশায় পড়েন, কেউ পড়েন শুধুই সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। এক ক্রেতা জানান, “আমি এক লক্ষ টাকায় আংটি কিনেছি। বাস্তবে তেমন প্রভাব না পেলেও একটা মানসিক প্রশান্তি অনুভব করি।”

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাথরের আংটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোলজির একজন পরিচালক বলেন, “অনেকে ইমিটেশনের নামে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। প্রকৃত ন্যাচারাল স্টোন দেশে খুব কম বিক্রি হয়। ভারতে ট্যাক্স দিয়ে বিক্রি হয়, আর এখানে আসে কর ফাঁকি দিয়ে।”

ইসলামি স্কলাররাও বলছেন, পাথরের আংটি পড়ে শারীরিক বা মানসিক সমস্যা সমাধানের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তাঁদের মতে, এগুলোর ব্যবহার যদি হয় সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য, তবে এর মূল্য তালিকা নির্ধারণ হওয়া উচিত।

পাথরের আংটির উপর নির্ভরতা বাড়ছে জ্যোতিষীদের ‘প্রেসক্রিপশন’ বা পরামর্শের ভিত্তিতে। কিন্তু দেশের কোনো সংস্থার কাছে নেই আংটির বেচা-কেনার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।

 

সূত্রঃ https://youtu.be/ckfDE3Co1Yk?si=rJALQzFQz9xsW6qz

রিফাত

×