
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিএনপির রাজনৈতিক চাপেই পদত্যাগের কথা ভেবেছিলেন,এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। তারা দাবি করেছেন, ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবিও বিএনপির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কৌশল, যা গণভূত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
রাজধানীতে এক টলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাতকারে এনসিপি নেতারা বলেন, বিএনপি যে-কোনো উপায়ে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের ভাষায়, ড. ইউনূসের কাঁধে ভর করেই বিএনপি এই লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছে, যা প্রধান উপদেষ্টা নিজেই মানতে পারছেন না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা অভিযোগ করেন, বিএনপি যেন তেনভাবে চাপ প্রয়োগ করে ক্ষমতায় যেতে চায়। তাদের ভাষায়, প্রধান উপদেষ্টার ঘাড়ে চড়ে কেউ ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করলে, তিনি তা মেনে নিতে পারেননি।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “আমরা অবশ্যই এটা মনে করি যে বিএনপির পক্ষ থেকে এটি সরকারকে একটি চাপ দেয়া,দ্রুত যেন নির্বাচনটা হয়। যমুনার সামনে চলে আসবে। যমুনাকে ব্লকেড করে রাখবে। আমরা মনে করি এটা অবশ্যই এই যে চেষ্টাটা, এই চেষ্টাটা কখনো ভালো চেষ্টা না।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, “একটা নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজ তাকে ব্যবহার করে বা তার ঘাড়ে চড়ে কেউ এই ধরনের কাজ করবে এটা তিনি মানতে পারছেন না এবং এ সমস্ত কারণে তিনি এরকম মন্তব্য করেছেন।”
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এনসিপি নেতাদের উদ্দেশ্যে কী বার্তা দেন তিনি, সে প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, “আমাদের দলের নির্দেশনাও যে, আমাদের রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই বোঝাপড়াটা আরো বৃদ্ধি করা। আমাদের যে ঐক্যের যে জায়গাটা, এই জায়গায় যেন কোন ঘাটতি না তৈরি হয়।”
এ নিয়ে সারোয়ার তুষার বলেন, “জাতীয় যে এজেন্ডাগুলো, সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করা, একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান করা এবং তার মধ্য দিয়ে একটা সুষ্ঠ নির্বাচন করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অধীনে একটা সরকারকে নিয়ে আসা,এই কাজগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ ইস্যু নিয়েও কড়া মন্তব্য করেন এনসিপি নেতারা। সারজিস আলম বলেন, “দুইজন যে উপদেষ্টা, অর্থাৎ আসিফ মাহমুদ এবং মাহফুজ আলম তাদের যে পদত্যাগ চাওয়াটা, আমরা জাস্ট আমাদের জায়গা থেকে মনে করি যে এটা একদম অনেকটাই উদ্দেশ্য প্রণোদিত আসলে। এখানে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হওয়া ছাড়া অন্য কোন কারণই নেই।”
সারোয়ার তুষার জানান, “ছাত্র উপদেষ্টা যারা গণবুদ্ধের প্রতিনিধি হিসেবে এই সরকারে আছেন, তাদের পদত্যাগের মত কোন বাস্তবতা নাই। বরং এটা যদি হয়, তাহলে সরকারটা একটা ১১ সরকার হয়ে যাবে।”
তবে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও আলোচনার মাধ্যমে ঐক্য গঠনের পক্ষে মত দেন এনসিপি নেতারা। সারজিস আলম বলেন, “যদি আমাদের মতবিরোধ থাকে, রাজনৈতিক দলের অবস্থানগত বিরোধ থাকে, সেটা যেন আমরা নিজেদের মধ্য দিয়ে আলোচনার মধ্যে দিয়ে একটি সুন্দর একটি জায়গায় যেতে পারি।”
সারোয়ার তুষারের ভাষায়, “সবাইকে একটা কমন স্পেসে আসতে হবে। নূন্যতম নিজেদের রাজনীতিগুলো ছেড়ে জাতীয় স্বার্থগুলোতে একমত হতে হবে।”
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার আহ্বানও জানান এনসিপির নেতারা। তাদের মতে, রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
সূত্র:https://tinyurl.com/hkr2y88s
আফরোজা