ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আন্দোলন ও বৃষ্টির জোড়া ধাক্কায় নগরজীবন নাজেহাল

আল জুবায়ের

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ২২ মে ২০২৫

আন্দোলন ও বৃষ্টির জোড়া ধাক্কায় নগরজীবন নাজেহাল

ছবি: জনকণ্ঠ


 বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ও সরকারের দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তার সমর্থকরা। আজও বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে রাজধানীর মৎস্য ভবন, কাকরাইল মোড় থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যেতে সড়কের ডান পাশে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। বৃষ্টিও তাদের কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারেনি। এতে এই এলাকায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার প্রতিবাদে আজ সকাল ১০ টা থেকে শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ কর্মসূচি বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে বলে জানা গেছে। এতে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে এই এলাকায় তৈরি হয় তীব্র যানজট। 

এর মধ্যে হঠাৎ শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। ফলে, অফিসগামী মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। নগরবাসীরা বলছেন, গোটা শহর যেনো থমকে দাঁড়িয়েছে। একটু কিছু হলেই রাস্তা আটকিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম এবং দাবি আদায় সে তো আছেই। কর্মজীবনে যাতায়াতের নেই একটুও স্বস্তির নিঃশ্বাস। জনভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে চান তারা।

সকাল ১১ টায় শাহবাগ মোড়ে এসে আটকে যান রণি মাহমুদ। তিনি বলেন, আমি গুলিস্তান যাওয়ার উদ্দেশ্যে সাভার থেকে সকাল করেই বের হয়েছি যেন জ্যামে না পড়তে হয়। কপাল খারাপ হইলে যা হয় ঠিক সেই জ্যামেই আবার পড়তে হলো। এভাবে প্রতিদিন যদি আন্দোলন হয় তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ যাবো কোথায়?

স্কুল শেষে সন্তানকে নিয়ে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন ফাহমিদা তিন্নি নামের একজন অভিভাবক। পথিমধ্যে বৃষ্টি আবার সামনে শাহবাগ মোড়ে আন্দোলন, শেষ পর্যন্ত নেমে এসে একটি দোকানে অবস্থান নেন। জানতে চাইলে রাগান্বিত স্বরেই বলে উঠলেন, আর ভাই প্রতিদিন একটা না একটা দাবি নিয়ে রাস্তা আটকে বসে থাকে সব। এসব নাটক দেখতে ভাল লাগে না। এই বৃষ্টির মধ্যে ছোট বাচ্চা নিয়ে কি ভোগান্তি আপনি নিজেই দেখেন। যদি সম্ভব হতো তাহলে দেশ ছেড়েই চলে যেতাম।

গত ১ মাস ধরে ঠিকভাবে ভাড়া না মারতে পারার আক্ষেপ করে দেওয়ান পরিবহনের চালক রবি মিয়া বলেন, আমাদের বাস এমনিতেই রাস্তায় কম। আর আমাদের শাহবাগ হয়ে ভাড়া মারতে হয়। ১ মাস হলো তা আর পারছি না, সব আন্দোলন এখানেই হয়। পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে মামা।

আন্দোলন নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, নগরীতে সভা-সমাবেশ করার ক্ষেত্রে আইন আছে। আবার নীরব এলাকায় বিকট শব্দে মাইক বাজানোর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আছে। এসব বিষয়ে আয়োজকদের অসচেতনতা এবং আইনের কঠিন প্রয়োগ না হওয়ার কারণে দিনের পর দিন এভাবে চলে আসছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্যই কঠোর হতে হবে।

প্রসঙ্গত,ডিএমপির পক্ষ থেকে দুর্ভোগ এড়ানো এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আন্দোলন না করতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, এলাকা নির্দিষ্ট করে দফায় দফায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও আন্দোলনকারীদের থামাতে যাচ্ছে না। নগরবাসীকে জিম্মি করে দিনের পর দিন চলছে আন্দোলন। অন্যদিকে দিনভর মাইক ব্যবহার করে স্লোগানে মুখরিত করে তোলায় বাড়ছে শব্দ দূষণও।

সাব্বির

×