ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে অনেক কাজেই বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হয়। সমন্বয়হীনতা দূর একটি সমন্বিত ওয়েবসাইট তৈরি পরামর্শ দিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল প্রকল্পের আপডেট দেয়া হবে। চলমান প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ প্রকল্পসহ সব প্রকল্পের কাজ এখানে উল্লেখ থাকবে। এটা দেখা অন্যান্য সংস্থা তাদের কাজ নির্ধারণ করতে পারবেন।’
বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)’র ভবনে যোগাযোগ বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর রেল এন্ড রোড (আরআরআর)’র সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি কথা বলেন। রিপোর্টার্স ফর রেল এন্ড রোডের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলামসহ সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জানান, বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দূর করতে প্রতি সপ্তাহে একটি করে সমন্বয় সভার আয়োজন করা হবে। এজন্য একটি বিশেষ সফটওয়্যারও তৈরি করা হবে। যেখানে নিয়মিত আপডেটগুলো দেয়া হবে। এই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো একে অপরের সঙ্গে ঠিকভাবে সমন্বয় করছে না। সবাই নিজ নিজ কাজ নিয়ে ব্যস্ত, কারো সঙ্গে কেউ সমন্বয় করতে চায় না। এ কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতি সপ্তাহে একটি সমন্বয় সভা করবো। এতে নতুন, চলমান ও আপকামিং প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরা হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধান করা হবে। এই সভায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি বিভাগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডাররাও উপস্থিত থাকবেন।
ঢাকা গণপরিবহনে শৃঙ্খলার জন্য শিগগিরই বাস রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রম শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের শৃঙ্খলা ফেরাতে বহুল প্রতীক্ষিত বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্প খুব শিগগিরই চালু করা হবে। এনিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও বাস মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। এখন যেহেতু দেশে রাজনৈতিক সরকার নেই, তাই কাজটি বাস্তবায়নে কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই। এটি বাস্তবায়নের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়।’
শেখ মইনউদ্দিন জানান, যানজট নিরসনে হাইকোর্ট মোড় থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যেই এর দৃশ্যমান অগ্রগতি পাওয়া যাবে। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হবে। এর ফলে নির্দিষ্ট স্টপেজে গাড়ি থামানো এবং সিগন্যাল অনুযায়ী চলাচল নিশ্চিত করা যাবে। এছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ করছে। এটি কার্যকর হলে এই যানবাহনগুলো নির্দিষ্ট রাস্তায় চলাচল করতে পারবে, সব রাস্তায় নয়।
দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রকল্পে খরচের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা একটি টিম গঠন করছি যারা সব প্রকল্পের খরচ যাচাই করবে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা আনাই আমাদের লক্ষ্য। ভূমি অধিগ্রহণ এখন প্রকল্প বাস্তবায়নের বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্প অনুমোদনের আগে সংশ্লিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, বিআরটিসি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. অনুপম সাহা, বিআরটিআর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসিন, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান, ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার।
ফারুক
