
ছবি: সংগৃহীত
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, তিনি একসময় সাংবাদিকতা করার চেষ্টা করেছিলেন, তবে একটি টেলিভিশন চ্যানেল থেকে মাসিক মাত্র ১৩ হাজার টাকা বেতন প্রস্তাব পাওয়ায় সে সুযোগটি গ্রহণ করতে পারেননি।
“একটি টিভি চ্যানেল ছয় দিনের কাজের জন্য আমাকে ১৩ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিল। দুইদিন নাইট শিফট, বাকিগুলো দিনে আট ঘণ্টার শিফট— এই বেতনে একজন মাস্টার্স ডিগ্রিধারী কীভাবে নিজের খরচ চালাবে, পরিবারকে কী পাঠাবে?”— বলেন মাহফুজ।
এক অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের পেশাগত সুরক্ষা, গণমাধ্যমের নীতিমালা এবং প্রচার মাধ্যমের আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেন। মাহফুজ আলম জানান, সরকার সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, রেডিও-টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা সংস্কার এবং মিডিয়া লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন হার পুনঃমূল্যায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, "সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের যেন যথাযথ সম্মান ও ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। অনেক স্থানীয় সাংবাদিক একইসঙ্গে পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, অথচ ন্যূনতম সম্মানীও পাচ্ছেন না। এতে তারা দুর্নীতির পথেই বাধ্য হন।"
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “সংবাদমাধ্যমের মালিকদেরও একাউন্টেবিলিটির আওতায় আনতে হবে। তারা যদি ট্যাক্স না দেন, অপ্রয়োজনীয়ভাবে ৩০-৪০টি পত্রিকা চালান, সেটি রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।”
মাহফুজ আলম বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “মামলা, হয়রানি, গায়েবি মামলা— এসব প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এটা বন্ধ করতে হলে ইনস্টিটিউশনাল রিফর্ম প্রয়োজন। সরকার এককভাবে নয়, বরং সকল শক্তির সঙ্গে সমন্বয় করে এগোচ্ছে।”
তবে তিনি স্পষ্ট করেন, স্বাধীনতা মানেই উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। “বিশ্বের কোনো দেশেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শর্তহীন নয়। দায়িত্বশীলতা ও একাউন্টেবিলিটি ছাড়া স্বাধীনতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না,”— বলেন মাহফুজ।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই মিডিয়ায় একটি ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে উঠুক, যেখানে সাংবাদিকেরা নিরাপদে কাজ করতে পারবেন, আর সংবাদ সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতার আওতায় থাকবে।”
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=uFgSyqdi_ZM
এম.কে.