![বাংলাদেশে নয়, ভারতেই শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো উচিত বাংলাদেশে নয়, ভারতেই শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো উচিত](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/10-2412051706.jpg)
.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে নয় বরং ভারতেই শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো উচিত। ভারতের মিডিয়াগুলোই শুধু বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশের মিডিয়ায় তেমন প্রভাব ফেলছে না বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে আন্তর্জাতিক ভলান্টিয়ার দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ সম্পর্কে সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, উনি মনে হয় ভুল করে বাংলাদেশের নাম বলে ফেলেছেন। আমার তো মনে হয়, উনার দেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা প্রয়োজন। কেননা আপনারা দেখেছেন, সেখানে সংখ্যালঘুদের কীভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে, বিষয়টি কি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে? জানতে চাইলে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমরা যখন সবাই একসঙ্গে হব তখন অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব হবে। এতে করে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব, একসঙ্গে প্রতিবাদ করতে পারব। এটা খুবই ভালো দিক।
প্রধান অতিথির ভাষণে সমবেত স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে বলেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে বন্যা, ভূমিকম্প, দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এক্ষেত্রে আপনারা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে কাজ করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। এজন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে ভূমিকম্পের ন্যায় ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবক এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহাপরিচালক তার বক্তব্যে ভলান্টিয়ারদের অবদান স্মরণ করে বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজাধস, ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টা কেমিক্যাল দুর্ঘটনা, এফআর টাওয়ার অগ্নি দুর্ঘটনা, ২০২২ সালে বিএম কন্টেনার ডিপোর অগ্নি দুর্ঘটনা এবং ২০২৩ সালে বঙ্গবাজার ও খাজা টাওয়ার অগ্নি দুর্ঘটনায় আপনাদের সাহসী অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি। আপনাদের স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব ও নির্ভয় অংশগ্রহণ দেশ ও জাতির দুর্যোগকালীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ।
তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৮৫ সালে প্রথম এ দিবসটি পালিত হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারাদেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ৫৫ হাজারের অধিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্পন্ন করেছে। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৩৪৮। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা ৬৫ হাজারে উন্নীত করা হবে। সব দুর্যোগ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিসের স্বেচ্ছাসেবকরা সর্বদা তৎপর থাকেন। দেশ ও জাতির স্বার্থে ফায়ার সার্ভিস সব সময় প্রস্তুত আছে।
বক্তব্য শেষে ভলান্টিয়ার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে শুরু হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। প্রধান অতিথি শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। পূর্বাচল ট্রেনিং গ্রাউন্ড থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে পুনরায় ট্রেনিং গ্রাউন্ডে এসে শোভাযাত্রা সম্পন্ন হয়। এরপর অনুষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ ও অপারেশনাল কার্যক্রমে সহযোগিতার স্বীকৃতি হিসাবে ২২ ভলান্টিয়ারের হাতে স্বীকৃতি সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। সবশেষে ভলান্টিয়ারদের অংশগ্রহণে সাজসরঞ্জামের বাস্তব ব্যবহারভিত্তিক অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার বিষয়ে প্রশিক্ষণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে দুই শতাধিক ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালকগণ, উপপরিচালকগণ, ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।