ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১

রেকর্ড ১৩০ মিমি বৃষ্টি

বৃষ্টিতে ডুবল রাজধানী

​​​​​​​জনকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০০:০৪, ১৩ জুলাই ২০২৪

বৃষ্টিতে ডুবল রাজধানী

কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শুক্রবার রাজধানীতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি বাড়ে নগরবাসীর

রেকর্ড বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাজধানী ঢাকা। শুক্রবার সকাল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রধান প্রধান সড়কে কোমর পানি। সেই পানিতে প্রায় ডুবে গেছে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যান। বিকল হয়ে পড়েছে ইঞ্জিন। জলজটে তৈরি হয়েছে বিশাল যানজট। রাস্তায় হেঁটে চলার কোনো পরিস্থিতিও নেই। জলাবদ্ধতায় ঢাকার রেলপথেও স্লিপারের দেখা মিলছে না। খালগুলো ভেসে অধিকাংশ মহল্লার লাখো মানুষ পানিবন্দি। বিপণিবিতানগুলোর নিচতলাও ডুবু ডুবু।

শুক্রবার ভোরে শুরু হওয়া অতিভারি বৃষ্টিতে রীতিমতো ভেসে গেছে তিলোত্তমা নগরী ঢাকা। অফিস থেকে হাসপাতাল, বিপণিবিতান থেকে অলিগলি সব জায়গায় পানিতে ডুবু ডুবু অবস্থা। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের ভিড় ছিল না। কিন্তু এদিন শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা থাকায় চাকরিপ্রার্থীদের দুর্ভোগ ছিল চরমে। যারা জীবিকার টানে বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে বেরিয়েছেন তাদের অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি।

নগরবাসী বলছেন, দুদিন পরপর সিটি করপোরেশনকে রাস্তা খুঁড়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করতে দেখি। সরকারও শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে। এরপরও দুই-তিন ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় ঢাকা। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে ১৩০ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই বছরের বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির রেকর্ড। এর আগে প্রাক বর্ষায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত ২৭ মে ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে প্রথম ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টি অতি ভারি হয়ে পরবর্তী ঘণ্টায় অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুর ১২টার পরও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিল, তবে তা সামান্য। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, আজ শনিবারও রাজধানীতে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে দিনভর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। রবিবার থেকে আবার বৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে।

টানা বৃষ্টিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যান্টিনে পানি জমে যাওয়ায় সাময়িক খাবার সংকট তৈরি হয়। রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে অভিজাত ধানমন্ডি সব জায়গায় বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে। বাদ যায়নি মিরপুর, খিলগাঁও, গোড়ান, বাসাবো, শান্তিনগর মহাখালী এলাকা। প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিতেও জলজট তৈরি হয়েছে। অনেক এলাকায় বিকেলের দিকে বৃষ্টির পানি নামতে শুরু করলেও কিছু এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।

পুরান ঢাকা পুরান ঢাকার বংশাল রোড, লক্ষ্মীবাজার, তাঁতীবাজার নবাবপুর রোডে সবচেয়ে বেশি পানি জমেছে। তুলনামূলকভাবে উঁচু ধোলাইখাল রোডটিও আজ সকাল থেকে অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। সড়কে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যানবহন হয়ে পড়ে বিকল। ফলে রিক্সা, মোটরসাইকেল, সিএনজি ঠেলে ঠেলে নিয়ে যেতে হয় অনেককে। এরপরও যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাস টার্মিনালে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। বিশেষ করে নিমতলী, চাঁনখারপুল এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের ওঠানামার মুখে লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, পুরান ঢাকায় পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা খুবই খারাপ। নিয়মিত এসব পরিষ্কার না করায় পানি নামতে অনেক দেরি হয়।

ধানমন্ডি-গ্রিনরোড একটু বৃষ্টি হলেই রাজধানীর গ্রিনরোড অচল হয়ে যায়। শুক্রবারের সকালের ১৩০ মিমি বৃষ্টিতে সড়কটি একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এই সড়কের চারপাশ দিয়ে হাসপাতাল-ক্লিনিক হওয়ায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বেশ। বাসিন্দারা জানান, অনেক দোকানের ভিতর পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। একই অবস্থা কলাবাগান রাজাবাজার এলাকার। এই এলাকায় ভারি বৃষ্টিতে মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। ধানমন্ডি সীমান্ত স্কয়ারের সামনের সড়কও পানিতে ডুবে ছিল। অনেক যানবাহনকে পানি ঠেলেই গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে। ধানমন্ডির ২৭ নম্বরেও পুরো সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বহু বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিক্সাকে পানিতে ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় আটকে থাকতে দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবেই সড়কে তৈরি হয় তীব্র যানজট।

এলিফ্যান্ট রোড নিউমার্কেট কাঁটাবন মোড় থেকে বাটার মোড় হয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পর্যন্ত এলিফ্যান্ট রোডে পানি জমেছে। ওদিকে নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট হয়ে নীলক্ষেত অবধি সড়কে পানি জমেছে। পানি জমেছে আজিমপুর এলাকাতেও। এতে এই এলাকায় স্থবিরতা নেমে আসে।

মিরপুর মিরপুরের অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে একটু বৃষ্টিতে কোমর পানি জমে যায়। কয়েক ঘণ্টার টানা বর্ষণে মিরপুরের চিত্র ছিল বেহাল। মূল সড়ক দেখে বোঝার উপায় ছিল না এটি সড়ক না নৌপথ। কাজীপাড়া সেনপাড়া ১০ নম্বর গোলচত্বর হয়ে সামনের দিকের পুরো সড়কটি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পানি ঢুকেছে সড়কের দুই পাশের মহল্লাগুলোর ভেতরের সড়কেও। টোলারবাগ মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে থেকে নম্বর মোড় পর্যন্ত সড়কে পানি জমেছে। বিশেষ করে সড়ক জনপথ অফিস থেকে বাংলা কলেজ পর্যন্ত সড়কে প্রায় হাঁটুপানি। এই সড়কের পশ্চিম দিকে টোলারবাগ এলাকার পশ্চিম প্রান্ত পুরোটাই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এই এলাকার খালগুলোও ভেসে গেছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া মুষলধারার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কল্যাণপুর প্রধান সড়ক। তবে দুপুরের পর এই সড়কের অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।

যা বলছে দুই সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কাজ করছে বলে জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন। তিনি বলেন, ঢাকার ১০টি অঞ্চলে ১০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। যারা বিভিন্ন ক্যাচমেন্ট এলাকায় কাজ করছে। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে যেসব পয়েন্ট থেকে আমরা ড্রেনেজ সিস্টেম পরিষ্কার করি, সেই পয়েন্টগুলোতে মানুষ বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা ফেলায় এলাকাভিত্তিক জলাবদ্ধতা নিরসনে সময় লাগছে। তবে বড় সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা কমেছে। ছাড়া কোথাও কোনো পানি জমে থাকলে ডিএনসিসির হটলাইন ১৬১০৬ এই নম্বরে ফোন করার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও। পানি নিষ্কাশনে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও। দক্ষিণের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের জানান, পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০০টি টিম সকাল থেকে কাজ করছে। ছাড়া দোলাইর পাড় কমলাপুরে পাম্প চালু আছে।

নিউমার্কেটে কোমর পানি, বিপাকে ব্যবসায়ীরা শুক্রবার সকালে প্রায় চার ঘণ্টার বৃষ্টিতে তালিয়ে গেছে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা। স্থানীয়দের পাশাপশি বেশি বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। জলজটের কারণে অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল সারাদিন। শুক্রবার দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এই এলাকার সড়ক চলাচলের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। সামান্য পথ যেতে রিক্সা বা ভ্যানে উঠে গন্তব্যে ছুটছেন যাত্রীরা। নিউমার্কেটের নিচতলায় থাকা অধিকাংশ দোকানেই পানি প্রবেশ করেছে। অনেক ব্যবসায়ীকে মালামাল সরিয়ে নিতেও দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, দোকানে পানি ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ার উপক্রম। কাপড় ভিজে গেছে। যে কারণে এসব মালামাল দোকান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন তারা। কাপড় ব্যবসায়ী কামেল বিশ^াস জানান, দোকানের নিচে যত কাপড় রাখা ছিল বেশিরভাগই ভিজে গেছে। সব কাপড় বাসার ছাদে নিয়ে শুকানো লাগব। এজন্য বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।

ঢাবি ক্যাম্পাসেও জলাবদ্ধতা অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসে। এতে  দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, সামান্য ভারি বৃষ্টি হলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সমস্যা বেশি।  ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে দুটি হলের প্রথম তলা। তলায় ক্যান্টিন থাকায় সাময়িকভাবে খাবার সংকট তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাবির কুয়েত মৈত্রী হল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের গেট থেকে শুরু করে হলের পেছন পর্যন্ত পানি। হলে নেই বিদ্যুৎ, বন্ধ আছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই হলের নারী শিক্ষার্থীরা। ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের গেট, প্রশাসনিক ভবনের সামনের রাস্তা, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের গেট, শহিদুল্লাহ হলের বিভিন্ন জায়গা, স্যার এফ রহমান হলের রাস্তা, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সামনে রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় কোমর পর্যন্ত পানি জমেছে। অতিরিক্ত পানির কারণে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে পাওয়া যাচ্ছে না রিক্সা। আবার পাওয়া গেলেও দ্বিগুণ ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। বিষয়ে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী মিতু আক্তার দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ভিতর থেকে মেইন রোড পর্যন্ত পানি থাকায় মেয়েরা রুম বন্দি হয়ে পড়েছে। মৈত্রী হলে নিচে ১৫টি রুমসহ অফিস কক্ষ এবং প্রাধ্যক্ষের রুমে পানি ঢুকে পড়েছে। তাছাড়া ক্যান্টিন ছাড়া খাওয়ার উপায় না থাকায় এমন সময় হাইজিন নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত এই দুই হলের শিক্ষার্থীরা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা হাফেজা খাতুন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের হলে প্রচুর পানি। অনেক রুমে পানি প্রবেশ করেছে। বিদ্যুৎ নেই। বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। এই পানি কতক্ষণ এভাবে থাকবে আমরা জানি না। শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ পানি সমস্যা সমাধান পানি নিষ্কাশনের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক . মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা সকাল থেকেই সিটি করপোরেশনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। বৃষ্টি না হলে আশা করি পানি ধীরে ধীরে নেমে যাবে।

সংকটের সমাধান কী বৃষ্টিতে কেন বারবার ডুবছে ঢাকা- এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকা শহরে খাল বা জলাশয় এখন শতাংশের নিচে। আর সবুজ ভাগের নিচে। ফলে পানি নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। যদি, জলাশয় ভরাট করা না হতো এবং পর্যাপ্ত সবুজ থাকত, তাহলে হয়ত এমন চিত্র হতো না। তিনি জানান, কংক্রিট নিয়ে আমরা একটা গবেষণা করেছিলাম, যেখানে ঢাকার উন্নত এলাকাগুলোতে ৮০ শতাংশের ওপর কংক্রিট। কোথাও কোথাও ৯০ শতাংশ। ফলে পানি নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। এই জলাবদ্ধতা আমাদের মেনে নিতেই হবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, আমরা যেটা করতে পারি, যে ড্রেনেজ সিস্টেম এবং জলাশয় অবশিষ্ট আছে, সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা করে জলাশয় ভরাট করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

আজও বৃষ্টির সম্ভাবনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকালের বুলেটিনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত নোয়াখালীর সন্দ্বীপে ২১৯, রাজশাহী ১৩৫, কুষ্টিয়া কুমারখালীতে ১১১ মিলিমিটারসহ প্রায় সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।

ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে ওই বার্তায় সতর্ক করা হয়েছে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় -১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে সেটিকে হালকা, ১১-২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩-৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪-৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

এর আগে বুধবার তিনদিনের ভারি বৃষ্টির সতর্কতাও জারি করেছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ু এখন অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকার কারণেই এই ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এই মৌসুমি বায়ুর অক্ষ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ এবং ভারতের আসাম হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকায় উপকূলীয় এলাকায় অতি ভারি বৃষ্টি হয়েছে। আজ শনিবারও দেশের অধিকাংশ স্থানে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

×