ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

পাইকারি-খুচরা বাজারে দামের ব্যাপক পার্থক্য

সবজিতে কয়েকগুন লাভ করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত: ২১:৪১, ৩১ মে ২০২৩; আপডেট: ২১:৫৬, ৩১ মে ২০২৩

সবজিতে কয়েকগুন লাভ করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা

কোনো কারণ ছাড়াই সবজির বাড়তি দাম।

দেশের বাজারে প্রতিনিয়ত সব ধরণের পণ্যের দাম বাড়ছে। মাছ, মাংস কিনতে হিমশিম খেলেও সবজিতেও ভরসা করতে পারছেনা নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। ৫০০ টাকা নিয়ে সবজি কিনতে গেলে প্রায় ৪ কেজিতেই তা ফুরিয়ে যাচ্ছে। ফলে নাভিশ্বাসের মধ্যদিয়ে দিন পার করছে সাধারণ পরিবারগুলো।

এদিকে, পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের পার্থক্যে বিশাল ব্যবধান বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। একেক ধরণের সবজিতে দিগুন থেকে প্রায় চারগুন বেশি লাভে সবজি বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। ফলে সবজির খুচরা বাজার মনিটরিং করার দাবি সাধারণ ভোক্তাদের। 

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারি আড়তে সরেজমিনে দেখা যায়, ৫ কেজি শশা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ৫ কেজি ঢেঁড়স প্রায় ১৩০ টাকা, ৫ কেজি পটল ১২০-১৩০ টাকা, ৫ কেজি বেগুন ১০০-১২০ টাকা, ৫ কেজি করলা ২৫০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৬০ টাকা, ৫ কেজি কাঁকরোল ২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ১৮ টাকা, ভালো সাইজের জালি কুমড়া প্রতি পিস ২০ টাকা, আলু কেজিতে ৩৪ টাকা, ভালো মানের ৫ কেজি টমেটো প্রায় ২০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ২৫-৪০ টাকাতে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও, অন্যান্য সবজিও এরকমই দামে পাইকারী বাজারে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

অপরদিকে রাজধানীর মিরপুর, মহাখালী, মোহাম্মদপুরের খুচরা বাজারে দেখা গেছে, করলা প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি  ৭০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা, কাঁচ কলার হালি ৫০ টাকা, শশা প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, ধনে পাতা ৫০ গ্রাম ১৫ টাকা করে কেজি ৩০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০-৫০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকা, টমেটো কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, আলুর কেজি ৪০-৪৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকা। অন্যান্য সবজিও এরকম পাইকারী বাজার থেকে ব্যাপক দামের পার্থক্যে বিক্রি করা হচ্ছে। 

এসব এলাকার খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ কম। তাই সবজির দামও বাড়তি। চাহিদার তুলনায় পণ্য ঢাকায় কম আসায় পাইকারি বাজারগুলোতেই সবজির দাম বাড়তি। এছাড়াও, বাড়তি পরিবহন খরচের কথাও জানান তারা। 

মিরপুর ১২ নম্বরের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, এখানের বাজারে সবজির দামে যেন আগুন। যেটা ধরি সেটারই দাম অনেক। এভাবে দাম বেশি হওয়ার আগের মতো সবজি কিনতে পারছিনা। মাছ-মাংসের পাশাপাশি সবজিরও এরকম দাম বৃদ্ধি পেলে সংসারের জন্য করুন অবস্থা হবে। পাইকারী বাজার মনিটরিং করতে দেখি সব সময়। এখন খুচরা বাজারও মনিটরিং করা দরকার। 

মহাখালীর বাসিন্দা সালমা আক্তার জনকণ্ঠকে বলেন, যেভাবে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সংসার চালানোর উপায় নাই। এতো দাম কেনো বাড়ছে? সবকিছুতো দেখলাম ঠিকই আছে। সংবাদে দেখলাম আদা ১০৫ টাকায় দেশে ঢুকে তা হয়ে যাচ্ছে ৩০০ টাকা। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের কাছে আমার অনুরোধ, সবজির খুচরা বাজারও মনিটরিং করা হোক।

দেশের বাজারগুলোতে প্রায় সময়ই দেখা যায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা উচ্চ লাভের আশায় পণ্য মজুদ রেখেও বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। আবার কেউ কেউ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন কারার জন্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সবজির বাজারেও এমনটা দেখা গেছে। ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগবে প্রয়োজন সবজির খুচরা বাজার মনিটরিং করা।  

সম্পর্কিত বিষয়:

×