ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ভুল সৌদি প্রযুক্তির-মাশুল গুণে হাব 

প্রকাশিত: ২১:০২, ২৮ মে ২০২৩; আপডেট: ২১:০২, ২৮ মে ২০২৩

ভুল সৌদি প্রযুক্তির-মাশুল গুণে হাব 

ফাইল ছবি

ঢাকা ও সৌদিতে হজ এজেন্সীগুলোর নানা অপকর্মের সব দায় নিতে হচেছ হাব সভাপতি শাহাদত হোসেন তসলিমকেই। প্রথম দফা ১৪৪জনের ভিসা জটিলতার দ্রুত অবসান ঘটিয়ে সৌদিতে পাঠানোর পরদিন খবর আসে সেখানে অতিরিক্তি ডলার রাখার দায়ে বাংলাদেশী হজ এজেন্সীর মালিক ও ছেলে ধরা পড়েছে। তারা এখনো সেখানকার পুলিশ হেফাজতে। এ অবস্থায় তাদের মালিকাধীন কোবা এয়ার ইন্টারন্যাশনালের অধীনে ৮২৩ জন হজযাত্রী চরম অনিশ্চয়তায় পড়েন। তারা যখন হজে যাওয়ার জন্য আকুতি মিনতি করছেন- তখন কেউ তাদেরকে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি।  এ অবস্থায় ধর্ম ও বিমান মন্ত্রনালয় স্পর্শকাতর এই বিষয়টি দ্রুত দেখার জন্য হাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিমের সহযোগিতা চায়। তারপরই সৌদি হজ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলে তাদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা করেন। তারপর তাদেরকে সৌদিতে পাঠানোর পর নতুন করে কোবা এয়ারের ৮২৩ জন ভিসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এবারও হাব সভাপতিকেই এগিয়ে আসতে হয়।

জানা গেছে-  নয় লাখ রিয়াল নিয়ে সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন কোবা এয়ার ইন্ট্যারন্যাশনালের মালিক মো. মাহমুদুর রহমান এবং তার ছেলে ইউরো ও আহসানিয়া হজ মিশনের মালিক সাদ বিন মাহমুদ। তাদের অধীনে ৮২৩ হজযাত্রীর ১ জুন সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল।  কিন্তু মালিক আটক হওয়ায় ওই তিন হজ এজেন্সির অধীনে নিবন্ধিত ৮২৩ জনের হজ পালন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। হাবের উদ্যোগে তাদেরকে ভিসা  ও টিকেটের ব্যবস্থা করা হয়। এখন তাদেরকে সৌদিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।আপাতত তিন ধাপে ২৭২ জনকে পাঠানোর সিদ্ধাšত হয়েছে। এরমধ্যে এজেন্সির মালিকরা মুক্তি পেলে বাকিদের বিষয়ে তারাই সিদ্ধাšত নেবেন। না হয় হাব বাকিদের হজে পাঠাবে বলে জানিয়েছেন হাব প্রধান। 

এ বিষয়ে হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন-আপাতত ২৭২ জনকে তিনটি ফ্লাইটে হজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে মালিকদের মুক্তি হয়ে গেলে বাকিরা মালিকদের তত্ত্বাবধানে যাবে। আর মুক্তি না হলে হাব পর্যায়ক্রমে বাকিদের হজে পাঠানো হবে। মালিক গ্রেপ্তার হয়েছে এজন্য তো হজযাত্রীরা দায়ী না। তাদের হজের পাঠানোর জন্য হাব দায়িত্ব নিয়েছে। আগামী ২ জুন, ৪ জুন এবং ১৫ জুন এই তিন ধাপে মোট ২৭২ জন হাজীকে হজে যাওয়ার ফ্লাইটের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে।  এর আগে ২৬ মে সৌদিতে আটক হন দুইজন মালিক। তারা তিন এজেন্সির মালিক। তাদের কাছে ৯ লাখ রিয়াল পাওয়ায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন।

জানা গেছে, আটক হওয়া এজেন্সির মালিক ও তার ছেলে তিনটি এজেন্সির হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য কাজ করছিলেন। তাদের আটকের ফলে সৌদি আরবে সেখানকার প্রস্তুতিমূলক কাজে সমস্যা দেখা দেয়। এ অবস্থায় ৮২৩ হজযাত্রী হজ অ্যাসোসিয়েশনে যোগাযোগ করলে তাদের প্লেনের টিকিট সংগ্রহের প্রয়োজনীয়  সহযোগিতা দেওয়াসহ ফ্লাইটের তারিখ ১০ দিন পিছিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এরমধ্যে প্রাথমিক তিন ধাপে ২৭২ জনকে হজে পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো। 

জানা গেছে- এমএস ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের ১৭০ জনের ভিসা না হওয়ার জন্য কারা দায়ী জানতে চাইলে হাব সভাপতি শাহাদত হোসেন তসলিম বলেন- এ দোষ ঢাকার কাউকেই দেয়া যাবেনা। মূলত ডিজিটাল সিষ্টেমের যেমন সুবিধা আছে তেমনি অসুবিধাও আছে। অনলাইনে ভিসার আবেদন করা হলে সেটা সৌদি দূতাবাস বা সেখানকার কৃতিপক্ষের নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে করা হয়। তখণ কিছু ধীরগতি বা অন্যকোন কারণে ভিসার আবেদন  আনলাইনে একটিভ হয়না। যে কারণে এটা নির্দিষ্ট সময়ে ফেল করে। কিন্তুু বিষয়টি যখন আমার কানে- আসলো তখনই আমি সৌদি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এর বিহিত করেছি। আগামী ১ জুন তাদের ফ্লাইট। এভাবেই একের পর এক সংকট মোকাবিলা করতে হচেছ হাবকে।

এ বিষয়ে ঢাকাস্থ বেশ কটি হজ এজেন্সী মালিক জানিয়েছেন, এজেন্সীগুলো নানা অপকর্ম করে। তারও দায় নিতে হচেছ হাবকে। যেমন-আসলে অনলাইনে ভিসার আবেদনে প্রুযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দেয়। সেটাা সৌদি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তারা ঢাকায় দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করে এগুলোর সমাধান দেয়। কিন্তু সৌদির এ ভুলের জন্য সব দায় এসে পড়ে হাব তথা সভাপতি শাহাদাত হোসেন  তসলিমের। তিনিও একে একে সবকি ভিসা কেইস নিজে তদ্বীর করে সবাইকে  দেখিয়ে দিয়েছেন।  

আজাদ সোলেমান

×