ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ থেকে ভোক্তা পর্যায়ে কেজিতে ৪০ টাকা কমবে

খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ চার কোম্পানির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ২৩ মার্চ ২০২৩

খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ চার কোম্পানির

রমজানে মুরগির খামার পর্যায়ে দাম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছে

রমজানে মুরগির খামার পর্যায়ে দাম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছে চার কোম্পানি। আজ শুক্রবার থেকে কাজী ফার্মস, প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব বহুমুখী ফার্মস ও সিপি বাংলাদেশের খামার পর্যায়ে এ দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হবে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে মুরগির দাম কত হবে- সেটা নির্ধারণ হয়নি। বৃহস্পতিবার অযৌক্তিক দামে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করায় চার কোম্পানিকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এরপর কোম্পানিগুলো খামার পর্যায়ে নির্ধারিত এ দামে মুরগি বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
এর আগে কোম্পানিগুলো অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ব্রয়লার মুরগির অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। এরপর সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ নির্ধারিত দামের কথা জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এ সময় তিনি বলেন, কোম্পানিগুলো বৃহস্পতিবার ২৩০ টাকায় খামার পর্যায়ে ব্রয়লার বিক্রি করেছে। আজ শুক্রবার থেকে ১৯০-১৯৫ টাকায় বিক্রি করবে। আশা করছি, ভোক্তা পর্যায়ে এখন দাম ৩০-৪০ টাকা কমবে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে গোয়েন্দা সংস্থা ও ভোক্তার কর্মকর্তারা আমাকে জানিয়েছেন সারাদেশে পাইকারিতে ২২০-২৩০ টাকায় ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে। সেটা হাতবদলে ২৬০ হচ্ছে খুচরায়। সফিকুজ্জামান বলেন, প্রতিটি ভোক্তা এখন মুরগির দাম নিয়ে কষ্ট করছে। আশা করছি, এ পদক্ষেপের কারণে দুই-তিনদিনের মধ্যে মুরগির দাম কমে আসবে। 
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার কোম্পানিগুলো আমাদের বলছে, ফিডের দাম বাড়ার কারণে এখন উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তবে আমরা এও বলেছি মুরগির দাম কোনোভাবেই ২০০ টাকার বেশি যৌক্তিক নয়। কোনোভাবে ৫০-৬০ টাকা বাড়তি দাম কাম্য নয়। আমরা কোম্পানিগুলোকে বলেছি, কোনো খাতে সরকার বেশি ইন্টারাপ্ট করলে সমস্যা, আমরা আপনাদের সাপোর্ট দেব। কিন্তু বাড়তি দাম মানব না। তাই তারা দাম কমানোর বিষয়ে রাজি হয়েছেন। এখন খামার পর্যায় থেকে দাম নির্ধারিত হবে। এরপর হাতবদলে দাম কত বাড়ছে, সেটা আমরা দেখব। গোয়েন্দা সংস্থা তদারকি করবে। তিনি বলেন, এরপর কোনো সমস্যা হলে, সমাধান না হলে আমদানি উন্মুক্ত করে দেব।
এ সময় কাজী ফার্মস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কাজী ফার্মসের কর্নধার কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, অনেক ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এ জন্য ফার্মসে দাম নির্ধারণ করে দেব। এরপর বাইরে অনেক হাতবদল হয়। তারপর দাম কত হচ্ছে, সেটা ভোক্তা অধিদপ্তর দেখবে। তিনি বলেন, সারাদেশে মুরগি উৎপাদনে ঘাটতি হয়েছে। ৩০ বছরের ব্যবসায় এমন অবস্থা দেখিনি। সরবরাহ কম থাকার কারণে মুরগির দাম বাড়ছে।

তিনি বলেন, আমরা যে চার কোম্পানি আছি, সে নির্ধারিত দামে বিক্রি করব। যখন খাবারের দাম ও খরচ কমবে, তখন সেটা আরও কমাব। সফিকুজ্জামান বলেন, মার্কেট লিডাররা এ দাম নির্ধারণ করল। বাজারে এর প্রভাব আসবে। বৃহস্পতিবার ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। ৪০ টাকা কমেছে। বাজারে এখন ভোক্তারা ৩০-৪০ টাকা কমে পাবে বলে আশা করি। 
ভোক্তা অধিদপ্তর বলেছে, এর আগে গত ৯ মার্চ পোল্ট্রি মুরগি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অধিদপ্তরের সভাকক্ষে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সভায় পোল্ট্রি (ব্রয়লার) মুরগি উৎপাদন ব্যয় করপোরেট পর্যায়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা ও প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, খুচরা পর্যায়ে পোল্ট্রি (ব্রয়লার) মুরগির মূল্য ২০০ টাকার অধিক যৌক্তিক নয় বলে প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়। এরপর বর্তমানে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে মুরগির বাজার।

খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। পাশাপাশি কাপ্তান বাজারে পাইকারি পর্যায়ে ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতি কেজি সিলেটে ২২৬ টাকা, কুমিল্লায় ২২৪ টাকা, হবিগঞ্জে ২২১ টাকা, নরসিংদীতে ২২০ টাকা, টাঙ্গাইলে ২১৮ টাকা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরে ২১৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায় ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারককালে।
গত ৯ মার্চ যৌক্তিক মূল্যে পোল্ট্রি (ব্রয়লার মুরগি) বিক্রয় করবেন বলে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিশ্রুতি দিলেও ব্যবসায়ীরা সেটা করেননি।

×